ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

দেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৯ মে ২০২১, ১৬:২৮  
আপডেট :
 ২৯ মে ২০২১, ১৮:২৮

দেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম
সংগৃহীত ছবি।

জনপ্রিয় দুই গেম ফ্রি ফায়ার ও পাবজি বন্ধ হচ্ছে বাংলাদেশে। এরইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুপারিশ করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দুই মন্ত্রণালয় থেকে এমন সুপারিশ পেয়ে এ নিয়ে আলোচনা করেছে । আলোচনায় ওই দুই গেমের আসক্তি নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়।

এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম দুটি বন্ধে দুই মন্ত্রণালয় থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। এটি সত্য যে ওই দুটি গেম কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের মধ্যে আসক্তি তৈরি করেছে।

বন্ধ করলেও তরুণরা ভিপিএন দিয়ে গেমটি খেলবে এমন প্রশ্নে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হ্যা, যারা এ ধরনের গেমে আসক্ত তারা ভিপিএনসহ নানা বিকল্প উপায়ে গেমটি খেলতে পারে। আমরা সেসবও বন্ধে পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করব।

শনিবার দুপুরে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব কথা বলেন।

অনেক ছেলেমেয়ে পাবজি ও ফ্রি ফায়ারে আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিলে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়। এই গেম কীভাবে বন্ধ করা যায়— এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না কেন? অদক্ষতা আপনাদের। প্যারেন্টাল কন্ট্রোল আছে সেটা ইউজ করেন।

তিনি আরও বলেন, ইন্টারনেটের জগতে কিছুই বন্ধ করা যায় না। মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলা—এটা কোনো সমাধান না। কতটুকু গেম খেলা উচিত, কতটুকু আড্ডা দেয়া উচিত, কতটুকু বাইরে যাওয়া উচিত, কতটুকু ঘরে থাকা উচিত; আপনি যদি আপনার সন্তানকে এটুকু কনভেন্স (বোঝানো) করতে না পারেন, ইটস ইউর ফেইলার (এটা অভিভাবকদের ব্যর্থতা)।

তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয় না বন্ধ করাটা সমাধান। আমি এই জায়গাটায় এখন পর্যন্ত একমত হতে পারি না। আমাদের এখানকার অভিভাবকরা সেই পরিমাণ যোগ্যতাসম্পন্ন নয়, এ কারণে ছেলেমেয়ে নষ্ট হয়।

অভিভাবকদের কাছে প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ছেলেমেয়েরা আর কোনো কারণে নষ্ট হয় না? তারা যখন সিগারেট খায় তখন নষ্ট হয় না? যখন মাদক নেয় তখন নষ্ট হয় না? ওগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন না কেন? এটার পেছনে কেন লেগে গেছেন এবং গেমের কারণে কী জন্য ইন্টারনেটের সুবিধা থেকে ছেলেমেয়েদের বঞ্চিত করবেন? আপনাদের সমস্ত জেনারেশন খোঁজেন। কোন জেনারেশন গেম খেলে নাই? আমাদের তো ভিডিও গেমসের দোকান ছিল। আইডিবি ভবনের কম্পিউটার দোকান থেকে সিডি পাইকারি বিক্রি হয়েছে। এখন প্রশ্ন তুলবেন, গেমে নেশা হয়ে যাচ্ছে। যেকোনো কিছুতেই নেশাগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে। সন্তান ফেসবুকের কোন সাইটে যেতে পারবে না পারবে সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কতক্ষণ থাকতে পারবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেগুলো না করে মাথা কাটার পথ ধরেছেন কেন?

তিনি বলেন, উল্টাপাল্টা চিন্তা করার চাইতে লেট দেম গ্রো (ছেলেমেয়েদের বড় হতে দিন)। আমাদের মাননীয় তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বন্ধ করাকে কখনোই সমাধান মনে করেন না। এর আগে একবার ফেসবুক বন্ধ করা হয়েছিল, তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন এটা না করার জন্য।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, কিছু খারাপ থাকলে আমরা চেষ্টা করব যাতে সেটাকে কন্ট্রোল করা যায়। কিন্তু বন্ধ করে দিয়ে কিছু করা যায়, এটা আমি মনে করি না। এখানে আমি মনে করি, সবচেয়ে বড় ভূমিকা অভিভাবকদের। তারা যদি তাদের দায়িত্ব পালন করেন তাহলে এগুলো কোনো সমস্যা না।

তিনি বলেন, ছেলেমেয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে—এরকম একটা কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ছেলেমেয় এত সহজে নষ্ট হয় না। নিজের সন্তানের ওপর আস্থা রাখেন। আপনার সন্তান যখন গেম ছেড়ে দেয়ার তখন ছেড়ে দেবে।

গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে, সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পাবজি ও ফ্রি ফায়ার গেম বন্ধ করতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে সংসদীয় কমিটির কোনো মিটিং হয় না। আর সংসদীয় কমিটি কোনো সুপারিশ করলে আমাকে ডেকে নিয়ে তো সুপারিশ করবে। আমাদেরকে বলবে। আমাদের আলোচ্যসূচির মধ্যে এগুলো ছিল না। সুতরাং এসব বলে কোনো লাভ নেই।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম দুটি নিয়ন্ত্রনের দাবি জানিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত