তিনদিন ধরে নিখোঁজ ইসলামী বক্তা, থানায় মামলা না নেয়ার অভিযোগ
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২১, ২১:৫৫ আপডেট : ১৩ জুন ২০২১, ২২:১১
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান তিনদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এমনকি এ ব্যাপারে থানায় মামলাও নেয়নি বলে দাবি করেছে পরিবারটি। খবর বিবিসি বাংলার
খবরে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন বক্তা আদনান। স্বজনরা নিখোঁজ হবার তথ্য জানাতে রাজধানীর দারুসসালাম এবং মিরপুর থানায় গেলে সাধারণ ডায়েরি বা মামলা নেয়া হয়নি।
তবে পুলিশ বলছে, ঠিক কোন জায়গা থেকে মুহাম্মদ আদনান নিখোঁজ হয়েছেন তা নিশ্চিত না হওয়ায় মামলা নেয়া হয়নি।
আদনানের স্ত্রী সাবেকুন নাহার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে আদনান রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। তার সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিলো রাত ২টা ৩৭ মিনিটে। তখন তিনি বলেছিলেন, কাছাকাছি চলে আসছি, এখন গাবতলী আছি। এরপর রাত তিনটা থেকে তার ফোন বন্ধ পাই, এখন পর্যন্ত নম্বর বন্ধই পাচ্ছি।’
‘নিখোঁজ হবার সময় তার সঙ্গে গাড়িচালকসহ আরো তিনজন সহকর্মী ছিলেন। গাড়িসহ তাদেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি’ বলেও অভিযোগ করেন আদনানের স্ত্রী।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেন মামলা হয়নি, জানতে চাওয়া হলে সাবেকুন নাহার বলেন, ‘কোথায় মামলা করবো, কার কাছে অভিযোগ করবো? মামলা করবো কী, কেউতো জিডিই নিতে রাজি হচ্ছে না।’
‘স্বামী নিখোঁজ হবার বিষয় নিয়ে গত শুক্রবার বিকেলেই পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছিলাম। কিন্তু রোববার বিকেল পর্যন্ত দারুসসালাম থানা কিংবা মিরপুর থানা কেউ মামলা গ্রহণ করেননি’ বলে জানান সাবেকুন নাহার।
সাবেকুন নাহার অভিযোগ করেন, ‘থানায় ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি। কোনো থানাই দায়িত্ব নিচ্ছে না, এক থানা আরেক থানাকে দেখিয়ে দিচ্ছে।’
তবে রোববার সকালে বক্তা আদনানের মায়ের পক্ষ থেকে রংপুর সদর থানায় এ বিষয়ে একটি জিডি করা হয়েছে।
৩১ বছর বয়সী আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানকে ফেসবুক এবং ইউটিউবে অনেকেই অনুসরণ করেন। বর্তমানে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নিয়ে এবং তার সন্ধান চেয়ে সামাজিক মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এদিকে আদনানের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দারুসসালাম এবং মিরপুর থানার সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। মিরপুর থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
দারুসসালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ স্বীকার করেছেন যে কোন সাধারণ ডায়েরি বা মামলা গ্রহণ করেননি তারা। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘উনি (বক্তা আদনান) কোথা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন সেই লোকেশনটা আমরা নিশ্চিত না। উনি গাবতলী থেকে নিখোঁজ হইছে, সেটা তো আমরা জানি না। সেক্ষেত্রে যেখান থেকে উনি রওনা হয়েছেন, সেই রংপুর অথবা উনার ঢাকায় যেখানে বাসা, সেখানে জিডি হতে পারে বা মামলা হতে পারে।’
‘এখন পুলিশ আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের মোবাইল ফোনের সর্বশেষ লোকেশন শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। এজন্য পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাহায্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে’ বলে জানান ওসি।
তিনি আরো বলেন, ‘গাবতলী এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের হাতে আছে। কিন্তু সেখানে আদনান বা তার গাড়িকে দেখা যায়নি।’
বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ