ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

সরকারি হাসপাতালে চলছে ওষুধের ভাগ বাটোয়রা

  মো. শাহীনুল হক, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২১, ১৭:২৩

সরকারি হাসপাতালে চলছে ওষুধের ভাগ বাটোয়রা

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার ও স্টাফদের বিরুদ্ধে রোগীদের জন্য বিনামূল্যে সরবরাহকৃত ওষুধ নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালে সমাজের অসহায়, গরিব, নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের জন্য সরকার ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রী বিনামূল্যে সরবরাহ করে থাকে।

কিন্তু সেসব ওষুধ মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার ও স্টাফরা নিজেরাই স্লিপ লিখে ইচ্ছেমত ওষুধ নিয়ে যায়।

সরকারি হাসপাতালের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে সরকারি ওষুধ পাচার করা হয়। ফলে বিভিন্ন সময় সাধারণ রোগীরা প্রয়োজনীয় ওষুধ না পেয়ে বাইরে থেকে বেশি দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য হয়। কিন্তু এর প্রতিরোধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোন উদ্যোগ নেই।

মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. কাজী সাদিয়া হাসপাতালের ফার্মেসী থেকে ১০ পাতা ইসোরাল (২০), ৫ কৌটা ক্যালসিয়াম, ৬ পাতা লুমনা ওষুধ নিচ্ছেন।

ফার্মেসীর ভেতরে থেকে হাসপাতালের মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট রঞ্জিত ওষুধের স্লিপ না দিয়েই ওষুধ নিয়ে যান। এছাড়া ঝাড়ুদার, টেকনোলজিস্ট ও নার্স থেকে শুরু করে হাসপাতালে কর্মরত অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের খেয়াল খুশি মত ফার্মেসী থেকে ওষুধ নিয়ে যান বলে স্বীকার করেন হাসপাতালে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

ফার্মেসী থেকে ওষুধ নেওয়ার কথা স্বীকার করে ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. কাজী সাদিয়া বলেন, আমার বাসার লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য কয়েকদিনের ওষুধ নিয়েছি। ওষুধ তো আমি একা নেই না। হাসপাতালের সবাই এভাবে ওষুধ নেয়। আপনারা যদি এটাকে সমস্যা মনে করেন তাহলে আমি ওষুধ ফেরত দিয়ে দেব।

মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ফার্মেসীর ইনচার্জ মো. লুৎফর রহমান বলেন, হাসপাতালের স্টাফরা অনেক সময় স্লিপ নিয়ে আসে আবার অনেক সময় স্লিপ থাকে না। একই জায়গায় করি বলে অনেক সময় এমনিতেই ওষুধ দিতে হয়। সবসময় তো আর স্লিপ চাওয়াও যায় না।

রেজিস্টারে ওষুধের হিসাব মেলান কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওষুধ দেওয়ার পরে আমরা নিজেরাই ডাক্তারের কাছ থেকে স্লিপ লিখিয়ে হিসেব মিলিয়ে দেই।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আরশ্বাদ উল্লাহ বলেন, অনেক রাজনৈতিক নেতাকর্মী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সাংবাদিকরা আমার কাছে এসে ওষুধ নিয়ে যায়। তাদের তো কাউন্টারেও পাঠাই না। আমার অফিসের পিয়ন দিয়ে ওষুধ আনিয়ে তাদের চাহিদা মতো দিয়ে দেই। আর হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কিছু ওষুধ নিতেই পারে। এ নিয়ে তো কথা বলার কিছু নেই।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত