ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

কঠোর বিধিনিষেধও সড়কে বাড়ছে গাড়ি চাপ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২১, ১৫:১৩

কঠোর বিধিনিষেধও সড়কে বাড়ছে গাড়ি চাপ
ছবি: সংগৃহীত

করোনা সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে মানুষকে ঘরে থাকতে বললেও মানছে না অনেকেই। বিধিনিষেধের সপ্তম দিনে চেকপোস্টে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকলেও সড়কে প্রতিদিন বাড়ছে গাড়ির চাপ। কারণে অকারণে মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে। রাস্তায় চলাচল করা মানুষের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। অনেকেই স্বাস্থ্যসেবার কথা বলছেন, আবার কেউবা জীবিকার প্রয়োজনে বের হয়েছেন। সকালে থেকেই রাস্তায় বেড়েছে গাড়ির চাপ। কোথায়ও দেখা গেছে গাড়ির চাপে যানজট।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, জিগাতলা, সিটি কলেজ মোড়, রাসেল স্কয়ার মোড়, গণভবন চেকপোস্ট, গাবতলী এলাকা, মাতুয়াইল, শনির আখড়া ঘুরে দেখা যায়, চেকপোস্টগুলোতে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন ঠিকই, তবে রাস্তায় চলছে শত শত গাড়ি।

এছাড়া প্রতিদিন জরিমানা বাড়লেও ঘর থেকে বের হচ্ছে নানা অজুহাতে। বহু মানুষ রাস্তায় বের হয়েছেন যাদের বেশিরভাগই বলছেন, হাসপাতালে রোগী দেখতে যাবে, কেউ বা আবার বলছে খাবার দিতে যাবে। অনেকেই আবার পুরনো প্রেসক্রিপশন নিয়ে ওষুধ কেনার কথা বলে বের হয়েছেন।

কামরুল ইসলাম একজন ব্যক্তিগত ড্রাইভার। থাকেন হাজারীবাগ এলাকায়। গাড়ি না চললেও বের হয়েছেন রাস্তায়। জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালিকের বাসার জন্য কিছু জরুরি জিনিস কিনতে বের হয়েছি। কি কিনতে বের হয়েছেন জানতে চাইলে কথা না বলেই চলে যান তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, অফিসের সময়টায় অনেক সড়কেই যানবাহন চলাচল করছে ধীরগতিতে। যদিও চেকপোস্টে কঠোর অবস্থানে ছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এদিকে রাজধানীর অলিগলিতে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সবকিছু খোলা রয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশনস) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, যারা অকারণে বের হচ্ছেন তাদের জেলসহ জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। প্রতিটি মোড়ে পুলিশ ছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনছে।

এদিকে সরকারের দেওয়া বিধি-নিষেধে সড়কে ব্যক্তিগত যান ও মোটরসাইকেলের চলাচল বেশি দেখা গেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট দেখে লুকোচুরি করে রাজধানীতে বেশকিছু অটোরিকশা চরাচল করতে দেখা যায়। পাড়া-মহল্লার গলিতে হরহামেশেই চলাচল করেছে রিকশা ও অটোরিকশা।

বাংলামোটরের ট্রাফিক সার্জেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন,কঠোর বিধিনিষেধের প্রতিদিন বাইরে বের হচ্ছে মানুষ। সড়কেও বারছে গাড়ির চাপ। ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ আরো বেশি। অফিস বন্ধ থাকলেও যারা বের হয়েছেন তাদের কাছে জানতে চাইলে বলেন অফিস আছে।

নানা কারণে মানুষজন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাচল করছেন। পাড়া-মহল্লায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে লুকোচুরি করেই দোকানপাট খুলেছেন অনেকে। পুলিশ, র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কারও গাড়ি দেখলেই দোকানের শাটার ফেলে দিচ্ছেন দোকানিরা। চলে যাওয়ার পর আবার খুলছেন।

গণপরিবহনগুলো না চললেও প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, জরুরি সেবা সংস্থার গাড়ি দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকপোস্ট ও কঠোর ভাবেই দেখা গেছে। এতে ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে দেখা গেছে দীর্ঘ যানজট।

এ বষিয়ে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, কঠোর বিধিনিষেধে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যানবাহন নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছে কিনা, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষ রাস্তায় চলাচল করছেন কিনা, সেগুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। অপ্রয়োজনে বের হলেই তাকে আটকে দেয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার।

বাংলাদেশ জার্নাল/এফজেড/এমএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত