ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

মসজিদে ‘নামাজরত’ মুসল্লিদের কুপিয়ে জখম

  যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:০৮  
আপডেট :
 ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:১৭

মসজিদে ‘নামাজরত’ মুসল্লিদের কুপিয়ে জখম
মসজিদ নিয়ে দ্বন্দ্বের ঘটনায় আহতরা। ছবি: প্রতিনিধি।

যশোরের চৌগাছায় মসজিদে নামাজ পড়ানো নিয়ে বিরোধ ও ব্লাকবোর্ড নিয়ে দ্বন্ধের জেরে ‘নামাজরত’ মুসল্লিদের ওপর হামলার ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, ইমামসহ উভয়পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গত রোববার মাগরিবের নামাজ চলাকালে ধুলিয়ানী গ্রামে নতুন মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, ইমাম মোমিনুর রহমানের সাথে এক প্রবাসীর স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক। এজন্য তাকে মসজিদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধা ছফির উদ্দিনের জমিতে নতুন মসজিদ তৈরি হয়।

সেই মসজিদে মোমিনুরকে ইমাম নিযুক্ত করা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়। এরমধ্যে শনিবার পুরাতন মসজিদে থাকা ইসালামী ফাউন্ডেশনের শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের একটি ব্লাকবোর্ড নতুন মসজিদে নিয়ে যান।

এ নিয়ে সকালে মোমিনুরকে মারপিট করে একপক্ষ। বিকেলে সেই পক্ষকে মারপিট করে নতুন মসজিদ করা পক্ষ। এর জেরে মাগরিবের নামাজরত অবস্থায় নতুন মসজিদে প্রবেশ করে ইমাম ও মুসল্লিদের চাপট (মাংস কাটার ধারালো অস্ত্র) দিয়ে কোপানো হয়। এসময় নারীরা বাঁধা দিতে গেলে তাদেরও কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়।

আহতরা হলেন, ধুলিয়ানী গ্রামের জান আলী (৪০), সামসুর রহমান (৫২), জোসনা বেগম (৫৫), হাবিবুর রহমান (৬০), রফিকুল ইসলাম (৩৫), আসাদুল ইসলাম (৪৫) তার ছেলে আবু শামা (২৫), ইমাম মোমিনুর রহমান (৪৩), রেখা বেগম (৩৫), নয়নতারা (৪০), যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ছফির উদ্দিন (৭০), আল-আমিন (৫২), রাহাতন নেছা (৫০), তার ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৬), ভারপ্রাপ্ত ইমাম মাওলানা সাইফুল ইসলাম (১৮)।

চিকিৎসাধীন ইমাম মোমিনুর রহমান বলেন, কিছু বিষয় নিয়ে তাদের সাথে আমার বিরোধ রয়েছে। থানায় অভিযোগও করেছি। আমি ইসলামী ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক।

ওই মসজিদে শিক্ষাকেন্দ্রের ব্লাকবোর্ড ছিল। শনিবার ছাত্র পাঠিয়ে ব্লাকবোর্ড নতুন মসজিদে নিয়ে আসি। এ কারণে রোববার সকালে ছাত্র পড়ানোর সময় গ্রামের শামসুল, নাসির, পিন্টুরা আমাকে মারপিট করে। তার জের ধরে সন্ধ্যায় তাদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। মাগরিবের সময় নামাজরত অবস্থায় গ্রামের শামসুল, আশাদুল, আবু শামা, রফিকুলসহ অন্যান্যরা আমাদের মারপিট করেছে।

আহত নারী রাহাতন, নয়নতারা ও রেখা বলেন, গ্রামে মসজিদ আমরা তৈরি করেছিলাম। সেখান থেকে ইমাম মোমিনুরকে অপবাদ দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর মাস খানেক আগে আরেকটি মসজিদ তৈরি করি। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা ছফির উদ্দিন জমি দিয়েছেন। এখন নতুন মসজিদে বেশি মুসল্লি হচ্ছে বলে তারা আমাদের কুপিয়ে জখম করেছে।

অভিযুক্ত আবু শামা সামান্য জখম নিয়ে হাসপাতালে এলেও এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি। মারামারির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু বলতে পারছি না।

তবে হাসপাতালে ভর্তি তার বাবা আসাদুল ইসলাম বলেন, ইমাম মোমিনুরের সাথে গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক। এ নিয়ে বিচার হয়। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন এসব আর করবেন না। এরপরও তিনি সেগুলো অব্যাহত রাখায় তাকে মসজিদ থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। ব্লাকবোর্ড নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আমাকেসহ কয়েকজনকে তারা মারপিট করে। এ বিষয়ে চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় দুই পরিবারের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত