ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪০ মিনিট আগে
শিরোনাম

সেপ্টেম্বরে ধর্ষণ ৭১, গণধর্ষণ ১৯

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬:১৪

সেপ্টেম্বরে ধর্ষণ ৭১, গণধর্ষণ ১৯
ছবি- সংগৃহীত

চলতি সেপ্টেম্বর মাসে ৩৪৭টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ৭১টি, গণধর্ষণ ১৯টি, ধর্ষণ ও হত্যা ৪টি, প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী ধষর্ণের শিকার হয়েছে ৮ জন।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) মাসিক মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

দেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও দেশে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা বিগত মাসগুলোর মতই অব্যাহত রয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতারোধে দেশে যথেষ্ট কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও অপরাধ দমনে ও নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা লক্ষণীয় নয়। বিচারহীনতা, বিচারে দীর্ঘসূত্রতা ও অপরাধ প্রবণতার বেড়ে যাওয়ায় নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে ধর্ষণের শিকার ৭১ জনের মধ্যে ৪৫ জন শিশু ও কিশোরী, অপরদিকে গণধর্ষণ এবং ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ১১ জনই শিশু ও কিশোরী। ধর্ষণচেষ্টা ২৮টি, যৌন হয়রানি ২২টি ও শারীরিক নির্যাতনের ৪২টি ঘটনা ঘটেছে। এসময়ে ২৩ জন শিশুকিশোরীসহ মোট ৭৩ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন, যা গত মাসের তুলনায় ১৫জন বেশি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অ্যাসিড নিক্ষেপে আক্রান্ত হয়েছে ২ জন নারী। অপহরণের শিকার হয়েছে ৩ জন শিশু। অপরদিকে ১২ জন শিশু, কিশোরী ও নারী নিখোঁজ হয়েছেন।

এছাড়াও আগষ্ট মাসে ৯ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ মোট ৬৯ জন শিশু, কিশোরী ও নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে ১৫ জন শিশু ও কিশোরী রয়েছেন। প্রতিশোধ, পারিবারিক বিরোধ, যৌতুক, প্রেমঘটিত ইত্যাদি কারণে এ হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হয়েছে।

প্রতিবেদন বলছে, এ মাসে ধর্ষণের ২টি, এক অন্ত:সত্ত্বা কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ধাপাচাপা দিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান সালিশের মাধ্যমে আপোষ মীমাংসা করেন। বাক-প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সালিশের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিনিময়ে মিমাংসা করেন। এ মাসে ৬ জন মৃত ও ৪ জন জীবিত নবজাতক শিশুকে বিভিন্ন স্থানে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে যা অমানবিক ও নিন্দনীয়।

এমএসএফ মনে করে- দেশে ধর্ষণ, শিশু ও নারীদের প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন, শ্লীলতাহানি, যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের ঘটনা যে হারে ঘটে চলেছে তাতে করে সামাজিক সুরক্ষার পাশাপাশি রাষ্ট্রের দায়দায়িত্ব বিশেষ করে সমাজে অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে সরকারের নজরদারি আরও জোরদার করতে হবে।

সেপ্টেম্বর মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাষ্ট্র কর্তৃক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ নাগরিকদের বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন চিন্তা, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং মতামত প্রকাশের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার প্রয়োগের পথ রুদ্ধ করার মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে হামলা, কারা হেফাজতে মৃত্যু, সীমান্তে হতাহতের মতো ঘটনাও বন্ধ হয়নি।

অপরদিকে ছিনতাই ও গনপিটুনির মতো ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর/এমজে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত