ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

যশোরে আগুনে পুড়ে নারীর রহস্যজনক মৃত্যু

  যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১৮:১৯  
আপডেট :
 ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১৮:২৬

যশোরে আগুনে পুড়ে নারীর রহস্যজনক মৃত্যু
ছবি: প্রতিনিধি

যশোরে আগুনে পুড়ে শিরিন আক্তার (২৮) নামে এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তিনি যশোর সদর উপজেলার আরবপুর মাঠপাড়ার জুয়েল সরদারের স্ত্রী। তবে এই মৃত্যুকে ঘিরে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।

নিহতের বাবার দাবি, শিরিনকে তার স্বামী গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু নিহতের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি, ওই নারীর স্বামীর উপস্থিতিতে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

আর পুলিশ বলেছে, উভয়ের ঘটনা শুনেছে। তবে বিষয়টি প্রকৃত তদন্ত না করে কিছুই বলা যাচ্ছেনা।

কোতয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম এলকাবাসির উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ওই এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে জুয়েল সরদারের সাথে ঝিকরগাছা উপজেলার কায়েমকোলা গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে শিরিন আক্তারের বিয়ে হয় প্রায় তিন বছর আগে।

দাম্পত্য জীবনে তাদের দেড় বছর বয়সের একটি সন্তান আছে। উভয়ের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে তাদের দাম্পত্য কলহ বাঁধে। এক পর্যায়ে শিরিন গ্যাসের চুলা থেকে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। সে সময় তার স্বামী জুয়েল বাড়িতে ছিলেন। শিরিন ছোটাছুটি করতে থাকলে জুয়েল পানি দিয়ে শরীরের আগুন নিভিয়ে দেয়।

এ সময় চিৎকার চেচাঁমেচি হলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। পরে শিরিনের দুই দেবর ও শাশুড়ি এগিয়ে এসে তাকে দ্রুত যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু হাসপাতাল থেকে তাকে খুলনায় রেফার্ড করা হলে বিকেলেই তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করলে ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

পরিদর্শক তাসমীম আলম জানিয়েছেন, শিরিনের মৃত্যু হলে জুয়েল ও তার দুই ভাই এবং মা সরাসরি রাত ১২টার দিকে যশোর কোতয়ালি থানায় লাশ নিয়ে আসে। পরে পুলিশ লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ওই রাতেই জুয়েলের মা আমেনা বেগম, ভাই রমজান ও সানা উল্লাহ নারীর পিতার বাড়ি কায়েমকোলায় যায়। ওই সময় পুলিশের কাছে সংবাদ আসে ওই তিনজনকে আটকে রাখা হয়েছে। পরে গভীর রাতে পুলিশ তাদের ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। এ দিকে ওই মৃত্যু সম্পর্কে নিহতের পিতা খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। জুয়েলের সাথে বিয়ের পর থেকে শিরিনকে নির্যাতন করতো। জুয়েলকে অনেক টাকা সোনার গহনা ও মালামাল দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও নির্যাতন করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে জুয়েল তার মেয়ের শরীরের পেট্রোল ঢেলে শরীরের আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে পালিয়ে গেছে।

কিন্তু জুয়েলের মা আমেনা জানিয়েছেন, তিনি অন্য বাড়িতে থেকেন। শিরিন অনেক জেদি মেয়ে। শুনেছেন-গন্ডগোলের পর শিরিন নিজের শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। ওই সময় জুয়েল পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে হাসতাপালে নিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে।

ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা এস আই আনছারুল হক জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি আশেপাশের লোকজনের কাছে ঘটনা শুনেছেন। তাতে মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক। ঘটনা তদন্ত না করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত