ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

৩০ লক্ষ টাকা অনুদান

এমপির তদারকিতে রামগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো পূজা উৎযাপন

  রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১৭:৫৪  
আপডেট :
 ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১৬:১৫

এমপির তদারকিতে রামগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো পূজা উৎযাপন
ছবি: প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খান নিজ নির্বাচনী এলাকায় চারদিন অবস্থান করেছেন। এ সময়ে ৪২ হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীর পাশে অবস্থান করে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে ৩০ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন তিনি। তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় ১৯টি মণ্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে পূজা উৎযাপন।

১১ অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উৎসবে যেন বিশৃঙ্খলা না হয়, সেই চিন্তা করে এমপি আনোয়ার খান আগের দিন রামগঞ্জে যান। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম রুহুল আমিন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুরাইয়া আক্তার শিউলি, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সৈকত মাহমুদ সামছু, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া সুমন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান ফায়সাল মাল, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শুভ, পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মিলন আটিয়া, যগ্ম আহ্বায়ক অপু মাল, দশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, নয়জন পৌর কাউন্সিলরসহ দলীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ১৯টি পূজামণ্ডপে প্রশাসনের পাশাপাশি পাহারার জন্য চৌকি বসান। প্রতিদিন রাতে আনোয়ার হোসেন খান নিজে মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন।

কুমিল্লার ঘটনা নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত বুঝতে পেরে রামগঞ্জের পূজামণ্ডপগুলোতে সাংসদ আনোয়ার হোসেন খান নেতাকর্মীদের নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে নিরাপত্তা শক্তিশালীভাবে জোরদার করেন। কিন্ত ইছাপুর ইউনিয়নে কোনো পূজামণ্ডপ না থাকায় সেখানের অধিকাংশ সনাতন ধর্মাবলম্বী উৎসব করতে অন্যত্র যান। এই সুযোগে ৩০/৩৫ জন দুর্বৃত্তের একটি গ্রুপ শ্রীরামপুর, ইছাপুর এবং সোন্দড়া গ্রামে হিন্দুদের পারিবারিক ৫টি উপাশনালয়ে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান প্রশাসন এবং নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ঘটাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। মন্দির সংস্কারের জন্য ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পাঁচ লক্ষ অনুদানও দেন তিনি।

উপজেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি সমির সাহা এবং সাধারণ সম্পদক লিটন সাহা বলেন, আমরা এমপি মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি প্রতিদিন রাত জেগে নেতাকর্মীদের নিয়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিয়ে আমাদের পাশে থাকায় আমরা নির্বিঘ্নে উৎসব করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, শুধু দুঃখ পেয়েছি, আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে ২৮ হাজার ভোট দিয়ে থাকি; কিন্তু রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমাদের পূজা উৎযাপনে সহযোগিতা তো দূরের কথা- একটু খবরও নেননি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম রুহুল আমিন ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদসহ স্থানীয় নেতারা জানান, রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিক মাহমুদ পিন্টু ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার হাবিবুর রহমান পবনসহ অনেককে এই ক্রান্তিকালে রামগঞ্জে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, পূজা উপলক্ষে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। ইছাপুরের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা জানান, রামগঞ্জের মানুষ খুবই ভাগ্যবান এমন একজন এমপি পেয়ে। এমপি মহোদয় ঘটনাস্থলে থাকায় আমরা খুব সহজে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। আমরা কঠোর অবস্থানে ছিলাম। কেউ ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে শান্ত রামগঞ্জকে অশান্ত করতে চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লক্ষ্মীপুর-১ রামগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, রামগঞ্জে সকল ধর্মের মানুষ আমার আপনজন। এখানে কাউকে বিশৃঙ্খলা করতে দেয়া হবে না। বুধবার রাতে দুর্বৃত্তরা একটা অঘটন করতে চেয়েছিল। শুক্রবার জুমার নামজের পর একটি গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে শান্তিপ্রিয় মুসল্লিদের বিপথগামী করে নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আমি মসজিদে অবস্থান করে নামাজ আদায় শেষে মুসল্লিদের ধৈর্য ধরে আইনের প্রতি আস্থা রাখতে বলি। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে রাজপথে অবস্থান নিই এবং সকল অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হই।

তিনি আরও বলেন, নেতাকর্মীদের নিয়ে সারারাত প্রত্যেকটি মন্দিরে বারবার গিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশে ছিলাম। আমার নেতাকর্মী, উপজেলা প্রশাসন ও থানার বলিষ্ঠ ভূমিকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়েছে।

আরও পড়ুন: সাংবাদিকরা হলেন জাতির কলম সৈনিক: আনোয়ার খান এমপি

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত