ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

গাজীপুরে প্রতিমা ভাঙচুরে জামায়ত নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা

  গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১৭:০৭

গাজীপুরে প্রতিমা ভাঙচুরে জামায়ত নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা
ফাইল ছবি

গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর বাজার এলাকায় ১৪ অক্টোবর সকালে তিন মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ২৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। স্থানীয় এক জামায়াত নেতা ও দুই কর্মীসহ স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার কয়েকজন স্টাফ ভাঙচুরে নেতৃত্ব দেয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) জাকির হাসান জানান, গ্রেপ্তারদের মধ্যে ২০ জনকে দুইদিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অপর ৮ জনের মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর ৭ জনকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, সেদিন প্রতিমা ভাঙচুরের নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় কোনাবাড়ি ইউনিটের জামায়াতের সভাপতি মো. রবিউলসহ জামায়াতের দুই কর্মী। রবিউল ইতোপূর্বে একটি মাদ্রাসায় ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। প্রাথমিকভাবে তাদের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার কতিপয় স্টাফ ওই হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। এ হামলায় আরও কারা নেতৃত্বে ছিলেন এবং কারা জড়িত রয়েছেন, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার পারিবারিক মন্দির পরিচালনাকারী সুবল চন্দ্র দাস জানান, আমাদের দুঃসময়ে গাজীপুরের সিটি মেয়র ও জেলা প্রশাসকসহ অনেকেই পাশে দাঁড়িয়েছেন। এজন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। রোববার সকালে জেলা প্রশাসক আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি মন্দিরের জন্য ৫০ হাজার টাকার চেক করে দিয়েছেন।

কাশিমপুর থানার ওসি মো. মাহবুবে খোদা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কাশিমপুর বাজারের শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাশিমপুর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবুল রুদ্র, কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার পারিবারিক মন্দির পরিচালনাকারী সুবল চন্দ্র দাস ও পালপাড়া নামাবাজার এলাকার সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিমল পাল বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মামলা তিনটি দায়ের করেছেন।

প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাত ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রথম ২০ জনকে গ্রেপ্তারর পর আদালতের নির্দেশে তাদের ২ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে আরও ৮ জনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের অনুমতি নিয়ে সোমবার অপর ৭ জনকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান ওসি।

কাশিমপুর বাজারের পালপাড়া শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাশিমপুর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবুল রুদ্র জানান, বৃহস্পতিবার সকালে পূজারীরা মন্দিরে পূজা-অর্চনা করছিলেন। সকাল ৭টার কিছু সময় পরে কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েকশ’ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে ঢুকে হামলা চালায়। তারা লক্ষী ও অসুরের প্রতিমা ভাঙচুর করে চলে যায়। এতে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

একইদিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দেড় দুইশ’ লোক কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সুবল দাসের পারিবারিক মন্দিরে এবং স্থানীয় পালপাড়া নামাবাজার সার্বজনীন মন্দিরে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা মন্দিরে থাকা সকল প্রতিমা ভাঙচুর করে উল্টে ফেলে দেয়। হামলার সময় ২০ হামলকারীকে ধরে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত