ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

কুড়িগ্রামে আকস্মিক বন্যা

তলিয়ে গেছে বহু আলু-বাদাম ক্ষেত, ডুবেছে পুকুর

  সৌরভ ঘোষ, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৪১  
আপডেট :
 ২১ অক্টোবর ২০২১, ১৭:৪২

তলিয়ে গেছে বহু আলু-বাদাম ক্ষেত, ডুবেছে পুকুর
ছবি: প্রতিনিধি

করোনার প্রভাবে টানা দুই বছরের ক্ষতির রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই শুষ্ক মৌসুমে আকস্মিকভাবে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে এসে তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বেড়ে ওঠায় কুড়িগ্রামের রাজারহাটে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার রাতেই পানির প্রবল স্রোতে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ডাংরা দাঁড়িয়ারপাড় বাঁধ ভেঙে গেলে এলাকাবাসীরা রাতেই সে বাঁধ বালুর বস্তা ফেলে মেরামত করে। তলিয়ে যায় ৫০০ হেক্টর আলু, বাদাম ও ধানক্ষেত। ডুবে যায় প্রায় ৪০০ পুকুর। ফলে বন্যায় লোকসানে পথে বসার উপক্রম হয়েছে চাষিরা।

কেউ কেউ ঋণের টাকা নিয়ে বেশি লাভের আশায় আগাম সবজি রোপণ করেছিলেন। স্বাবলম্বী হওয়ার বদলে এখন নিঃস্ব হওয়া কৃষকদের চোখে-মুখে হতাশা দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে অসহায় পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। এ সময় রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ কর্মকার উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে রাজারহাট উপজেলার কাউনিয়া পয়েন্টে আকস্মিকভাবে পানি বাড়তে শুরু করে। বিকেল গড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথে প্রবল বেগে পানি উপজেলার চর খিতাব খাঁ, চর গতিয়াসাম, চর বিদ্যানন্দ, চর রাম হরি, চর তৈয়বখাঁ গ্রামে প্রবেশ করে। এতে সহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তলিয়ে যায় তিস্তার চরের আনুমানিক ৫০০ হেক্টর জায়গাজুড়ে লাগানো আলু ও বাদামসহ ধান ক্ষেত। আকস্মিক বন্যায় মাঝ রাতে ডুবে যায় এসব এলাকার প্রায় চার শতাধিক পুকুর।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অনেকের রান্নাঘরে পানি ওঠায় বন্ধ রয়েছে রান্না। নিম্নআয়ের অনেক পরিবারে নেই শুকনো খাবার। গবাদিপশু নিয়ে সঙ্কটে রয়েছে বানভাসি পরিবারগুলো।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কাউনিয়া পয়েন্টে উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর পানি কমতে শুরু করবে।

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম বলেন, ডিসি স্যার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ইতোমধ্যে পানি কমতে শুরু করেছে। এছাড়া বন্যাকবলিত পরিবারের তালিকা তৈরি করে শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম বলেন, বন্যা কবলিতদের নিরাপদ স্থানে ও আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া তাদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ ও শুকনো খাবার রয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত