ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫১ মিনিট আগে
শিরোনাম

সম্প্রীতির সমাবেশে মারামারি, আহত ১০

  কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ২২:৩৮  
আপডেট :
 ২৩ অক্টোবর ২০২১, ২২:৪০

সম্প্রীতির সমাবেশে মারামারি, আহত ১০
ছবি: প্রতিনিধি

‘সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে কুমিল্লা উত্তর জেলা ও দেবীদ্বার উপজেলা যুবলীগের আয়োজনে শান্তি-সম্প্রীতি র‍্যালি ও আলোচনা সভা চলাকালে ব্যানার ধরা নিয়ে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

দেবীদ্বার উপজেলায় ঘটা এ সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। মারাত্মক আহত সোহাগ (১৯) ও মামুনুর রশীদ (২০) নামের দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, নেতাকর্মীরা স্বাধীনতা চত্বরের বেদিতে জুতা পায়ে উঠে বক্তব্য দেয় এবং সংঘর্ষ চলাকালে বেদির সৌন্দর্যবর্ধনে দৃষ্টিনন্দন ঝলকবাতির পিলারগুলোও ভেঙে ফেলে।

শনিবার বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত দেবীদ্বার নিউমার্কেটস্থ স্বাধীনতা চত্তরের সামনে এবং পুরাতন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সংগঠনের নেতারা জানান, যুবলীগ নেতা আনিছুর রহমান ব্যানারের একপাশে ধরে থাকলে অপর সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম ব্যানার ধরতে চায়। এ সময় ব্যানার নিয়ে টানাটানি শুরু হলে এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে প্রথমে ধাক্কা-ধাক্কি হয়। পরে তাদের সমর্থকদের মধ্যে দুই পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।

ঘটনার এক পর্যায়ে সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহীর হোসেনের দেবীদ্বার পুরাতন বাজারস্থ ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলার সংবাদ পাওয়া যায়। পরে জহির সমর্থকরা সেখানে ছুটে যায়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় একাধিক যুবলীগ নেতার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি ও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য ও যুবলীগ উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী জাফরগঞ্জ মীর আব্দুল গফুর কলেজের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম শামিম ব্যানার ধরাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, ঘটনাটি রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক বিষয় নয়। সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহীর এবং যুবলীগ নেতা আনিসের মধ্যে ব্যানার ধরা নিয়ে হাতাহাতি ও পরে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাদ্দামের অফিস ভাঙচুরের সংবাদে জহীর গ্রুপের লোকজন ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তবে অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি।

এছাড়া স্বাধীনতা চত্তরের বেদিতে উঠে বেদির অবমাননার বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, বেদিতে আমাদের নেতাকর্মীরা বক্তৃতা দিলেও জুতা খুলে উঠেছিল। পরে তাদের সবাইকে নামিয়ে দেই। বেদির দৃষ্টিনন্দন বৈদ্যুতিক বাতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা আগামীকাল মেরামত করে দেবো।

অনুষ্ঠান চলাকালে বক্তারা বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই। হাজার বছর ধরে হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খৃষ্টানসহ নানা ধর্মালম্বীর দেশ বাংলাদেশ। আমাদের বিভিন্ন ধর্মালম্বীদের সম্প্রীতি অব্যাহত বজায় আছে এবং থাকবে। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে ধর্মকে পুঁজি করে একটি কুচক্রী মহল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির লক্ষ্যে নানা অপকর্ম এবং অপপ্রচার চালালেও তা প্রতিহত করেই আমরা এগিয়ে চলছি।

এর আগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় দেবীদ্বার নিউমার্কেটস্থ আওয়ামী যুবলীগের কার্যালয় থেকে র‍্যালি শুরু করে নেতাকর্মীরা। কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের স্বাধীনতা চত্বরে গিয়ে র‍্যালি শেষ হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। বক্তব্যের এক পর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়।

দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল কাশেম ওমানীর সভাপতিত্বে এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জিএস মান্নানের সঞ্চালনায় ওই র‍্যালি ও শান্তি-সম্প্রীতি সভায় বক্তব্য রাখেন, জাফরগঞ্জ মীর আব্দুল গফুর কলেজের প্রভাষক ও সাবেক ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম শামীম, ব্যবসায়ী ও সেচ্ছাসেবক লীগ কুমিল্লা উত্তর জেলার সদস্য শাদাৎ হোসেন মিঠু, ছাত্রলীগ কুমিল্লা উত্তর জেলার সভাপতি আবু কাউছার অনিক, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানিক চক্রবর্তী, কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য ছাদ্দাম হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন রুবেল প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত