ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

সেই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা জানা যাবে ২৮ নভেম্বর

  সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ২২:২৪

সেই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা জানা যাবে ২৮ নভেম্বর
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে এই সিদ্ধান্ত জানাতে আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সময় নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেই সময় পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল ৪টা থেকে প্রায় সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও রেজিস্ট্রারের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।

বিষয়টি সন্ধ্যা ৬টার দিকে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন সভার মধ্যস্থতাকারী শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. শামসুজ্জোহা এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থী আবু জাফর হোসাইন।

ইউএনও শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, বিকেল ৪টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আব্দুল লতিফ এবং রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব আলীর একটি বৈঠক হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর পরিবেশ ফিরে আনার স্বার্থে বৈঠকটি আমি নিজেই মধ্যস্থতা করে ব্যবস্থা করেছি এবং সেখানে উপস্থিতও ছিলাম। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার সমাধানে আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। শিক্ষার্থীরাও সেটা মেনে নিয়ে আন্দোলন স্থগিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে, তদন্তে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যে আইন দরকার সেটি এখনো প্রণয়ন করা হয়নি। এজন্য সেই আইনটি আগে প্রণয়ন করতে হবে। আর সেই আইন প্রণয়ন করতেই সময় নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু জাফর হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সময় নিয়েছে এবং আমরা সেই পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মধ্যখানে অনুষ্ঠিত সব পরীক্ষাতেও আমরা অংশগ্রহণ করবো।

সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে শিক্ষার্থী বলেন, আমাদেরকে বলা হয়েছে তদন্তে এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া গিয়েছে এবং সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থায়ীভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য যে আইন দরকার সেটি এখনো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রণয়ন হয়নি। সেটা প্রণয়ন করতে সময় দরকার।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, আগামীকাল (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একটি প্রতিনিধি দল এই ঘটনার তদন্তে আসবে। এটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় এখনো কিছু নিয়ম ও আইন প্রণয়ন হয়নি, তাই সেগুলোও করতে হবে এই সময়ের মধ্যে।

অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মৌখিকভাবে এটা শুনেছি। এর বেশি কিছু জানি না।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন নিজেই কাঁচি হাতে ১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বলে অভিযোগে ওঠে। সেই শিক্ষার্থীদের একজন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে তাকে বকাঝকা করেন বলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। এরপর ওই ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

ওই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনটি প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন। এই ঘটনায় ফারহানা ইয়াসমিনকে অপসারণের দাবিতে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি একটি বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড থেকে তাকে বিরত থাকতে বলা হয়।

গত বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) এই ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর শুক্রবার বিকেলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সিন্ডিকেট সভা বসে। সেখানে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এমনটা জানার পর আবার অনশনের মধ্য দিয়ে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত