ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩০ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে প্রেমিকা

  পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ২২:০৮

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে প্রেমিকা
ছবি: প্রতিনিধি

চার বছর ধরে প্রেম করেও বিয়ে না করায় প্রেমিকের বাড়ি গিয়ে অনশন শুরু করছেন হাসনা খাতুন (২২) নামের এক কলেজছাত্রী। তিনি গত ৯ দিন ধরে অনশন করলেও কোনো আইনগত সহায়তা পাচ্ছেন না। স্থানীয় একজন নারী ইউপি মেম্বার তার খাবারের ব্যবস্থা করছেন।

কলেজছাত্রী অনশন করার পর থেকে প্রেমিকসহ বাড়ির লোকজন পালিয়ে রয়েছেন। প্রেমিক সেলিম রেজা বিয়ে না করলে কলেজছাত্রী আত্নহত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। প্রেমিক-প্রেমিকার বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানাধীন পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামে।

কলেজছাত্রী হাসনা খাতুন কল্যাণপুর গ্রামের আবুল হোসেন রাজমিস্ত্রির মেয়ে আর প্রেমিক সেলিম রেজা একই গ্রামের তোতা মাঝির ছেলে। হাসনা খাতুন স্থানীয় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

হাসনা খাতুন গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, গত চার বছর ধরে তাদের প্রেমের সস্পর্ক চলছে। তাদের দুই পরিবার পরস্পর আত্নীয় হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই তাদের বন্ধুত্ব। এক পর্যায়ে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। তাদের সম্পর্ক অনেক ঘনিষ্ঠ। তার কাছে বিভিন্ন প্রমাণও রয়েছে বলে জানান।

হাসনা খাতুন আরও জানান, তিনি এর আগে সেলিম রেজার কথামতোই তাদের বাড়ি গিয়ে উঠেছিলেন। তখন বাড়ির লোকজন তাকে বলে, সেলিম চাকরি পেলে তাকে তারা ঘরে তুলে আনবে। এসব কথা বলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল। সম্প্রতি সেলিমের চাকরি হয়েছে। কিন্তু সেলিমের বাড়ির লোকজন ছেলেকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয়ার জন্য পাত্রী দেখছেন। এ বিষয় জানার পর হাসনা খাতুন তার প্রেমিক সেলিমকে জানান। সেলিম তাকে তাদের বাড়ি এসে উঠতে বলেন। সেই মোতাবেক গত ১৬ নভেম্বর হাসনা সেলিমদের বাড়ি আসেন।

তিনি আরও জানান, এবার আসলে সেলিমের বাড়ির লোকজন তাকে মারধোর করেন। তারপরও তিনি বাড়ি ছেড়ে না যাওয়ায় এবং গ্রামের লোকজন ভিড় করায় সেলিম ও তার বাড়ির লোকজন গা ঢাকা দেন। এরপর থেকে হাসনা এ বাড়িতেই অনশন করে যাচ্ছেন।

হাসনা জানান, তারা গরিব হলেও তাদের আত্মসম্মান রয়েছে। তিনি এখন বাড়ি গিয়ে কীভাবে মুখ দেখাবেন বলে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে বিয়ে না করলে আমি আত্মহত্যা করবো।’

এ ব্যাপারে প্রেমিক সেলিম ফোন ধরে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সংযোগ কেটে দেন।

এদিকে এ কলেজছাত্রীকে স্থানীয় নারী ইউপি মেম্বার সেলিনা খাতুন বাড়ি থেকে খাবার দিয়ে সাহায্য করছেন। এছাড়া অসহায় মেয়েটির জন্য কেউ এগিয়ে আসেননি।

এ ব্যাপারে আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রওশন আলী বলেন, বিষয়টি তারা শুনেছেন। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। সামাজিকভাবে বিষয়টির সমাধান করতে হবে।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুর আলী জানান, প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থান করার বিষয়টি শুনেছেন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং ওয়ার্ড মেম্বারকে বিষয়টি সমাধান করে দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কলেজছাত্রী প্রতারিত হয়েছেন মনে করলে থানা পুলিশ বা আদালতেও যেতে পারেন। তারপরও সামাজিকভাবে সমাধান করা যায় কিনা, তিনি দেখবেন।

এ ব্যাপারে ছেলের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে মেয়েটির বাবা আবুল হোসেন জাানান, সামজিকভাবে ওই ছেলের সাথে তার মেয়ের বিয়ে হলে তিনি মেনে নেবেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত