ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঈদগাহ মাঠ নিয়ে নরসিংদীতে সংঘর্ষ, আহত ৫

  নরসিংদী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:১০  
আপডেট :
 ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৬:১৫

ঈদগাহ মাঠ নিয়ে নরসিংদীতে সংঘর্ষ, আহত ৫
ছবি- প্রতীকী

নরসিংদীর মাধবদীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষেহ ৫ জন আহত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে মাধবদী থানার নুরালাপুর ইউনিয়নের মাটিয়ালকান্দা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাজারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। গুরুতর আহত এক যুবকের পরিবারের দাবি, হামলার সময় তাদের ওপর গুলি করা হয়েছে।

ওই যুবকের নাম মেহেদি হাসান (২৫)। তিনি মাটিয়াল কান্দা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য হারুন রশিদ ওরফে হারুন মেম্বারের ছেলে। এ ঘটনায় মেহেদির বাবা হারুন রশিদও গুরুতর আহত হয়েছেন। বাকি আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

স্থানীয়রা জানায়, নুরালাপুর ইউনিয়নের মাটিয়ালকান্দা ও শ্যামতলী গ্রামের মধ্যে একটি ঈদগাহ মাঠ নিয়ে বিরোধ চলছে। এই বিরোধের জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। ২০১৭ সালের একটি সংঘর্ষের ঘটনায় দুই গ্রামবাসী পাল্টা-পাল্টি থানায় মামলা দায়ের করে।

শ্যামতলী গ্রামের দায়ের করা মামলায় আসামি ছিলেন নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান ভূঞা, তার ভাই আকবর, নাসির , ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হারুন মেম্বারর তার ভাই আজহার। মামলার আসামির তালিকা থেকে সাদেকুর ও তার ভাইদের নাম বাদ গেলেও নাম থেকে যায় হারুন ও তার ভাই আজহারের। পরে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মামলার দুই পক্ষই আপোষে যায়।

এই মামলা আপোষে যাওয়ার কারণে ও সেটির নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে আর্থিক লেনদেনের বিরোধ বেধে যায় সাদেকুর রহমান ও হারুন মেম্বারের মধ্যে। এরই জেরে শনিবার বিকেলে দুই পক্ষই দেশীয় অস্ত্র ও পিস্তল নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা করে। এ সময় মাটিয়াল কান্দা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য হারুন মেম্বারের ছেলে মেহেদির পায়ে গুলি লাগে এবং দুই পক্ষের আরও চারজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠির আঘাতে আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

আহত মেহেদির বাবা হারুন মেম্বার বলেন, মামলা কেন আপোষে গেলাম এই কারণে সাদেকের ভাই আকবর ও তার লোকরা আমাকে কয়েকবার রাস্তায় আটকিয়েছে। তাদের মামলায় ১০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। এই টাকা আমার কাছে দাবি করে। শনিবার দুপুরেও বাড়িতে যাওয়ার সময় তারা আমাকে ডাক দেয়। আমি সাড়া না দিয়ে বাড়িতে চলে যাই। পরে সাদেক চেয়ারম্যান গ্রুপের সুমন, সুজন, নাসিরসহ আরও কয়েকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমার ছেলেকে গুলি করে তারা।

নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান ভূঞার ছোট ভাই নাসির ভূঞা বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। হারুন মেম্বারের বাড়ির পাশ দিয়ে আমাদের বাড়িতে যেতে হয়। আজকে ওরা আমাদের আটকালে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি বেধে যায়। এতে আমাদেরও কয়েকজন আহত হয়েছে।

নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাজারুল ইসলাম বলেন, মেহেদি নামে ওই যুবকের পায়ে গুলি লেগেছে বলে জানি আমি। এছাড়া দুই পক্ষের প্রায় ৪-৫ জন আহত হয়েছে।

নুরালাপুর ইউপি চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম বলেন, এখন কোনো ঝামেলা নেই। এলাকায় পুলিশ আছে। পরিবেশ এখন শান্ত।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আসাদ আবদুল্লাহ খান বলেন, হাসপাতালে মারামারিতে আহত বাবা-ছেলেকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। ছেলের ডান পায়ে একটা ক্ষত আছে। কিন্তু এটা আসলেই গুলি কি না, তা নিশ্চিত নই এখনও। পরিবারের দাবি গুলি করা হয়েছে, কিন্তু আমরা ভেতরে এক্সরে রিপোর্টে কোনো গুলি পাইনি।

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সৈয়দুজ্জামান বলেন, রামারি হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। কিন্তু কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছে এমন শুনিনি আমি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত