ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

সরকারি কর্মচারীদের মাদক অপরাধে জড়ানো অনভিপ্রেত

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ২০:৫১

সরকারি কর্মচারীদের মাদক অপরাধে জড়ানো অনভিপ্রেত

মাদককে একটি বড় সামাজিক ব্যাধি হিসেবে আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কিছু অসাধু কর্মচারী মাদক সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এটি খুবই অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক।

পুলিশ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, দেশের তরুণ সমাজের একটি অংশ মাদক সংক্রান্ত অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কিছু অসাধু কর্মচারী মাদক সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এটি অনভিপ্রেত, দুঃখজনক। যুব সমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করতে হবে। পুলিশকে এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নিয়ে আরও বেশি সক্রিয় ও তৎপর হতে হবে। প্রয়োজনে শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সাধারণ মানুষ বিপদে পড়েই আইনি সেবা পেতে পুলিশের কাছে আসে। আপনারা এসব বিপদাপন্ন মানুষের সমস্যা ও অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শুনবেন, তাদেরকে আন্তরিকতার সঙ্গে আইনি সেবা দিতে কখনো কুণ্ঠাবোধ করবেন না।

আবদুল হামিদ বলেন, সেবা প্রার্থীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখবেন, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ সপ্তাহে ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘তোমরা জনগণের পুলিশ’। আপনারা প্রকৃত অর্থে জনগণের পুলিশ হওয়ার লক্ষ্যে ‘বন্ধু’ হিসেবে জনগণের পাশে দাঁড়াবেন, মানবিক পুলিশ হবেন। জনগণকে সেবা প্রদান এবং তাদের আস্থা অর্জনের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং এবং বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে, তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশকে জনবান্ধব পুলিশ ও মানবিক পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আপনাদেরকে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে।

পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বাড়িয়ে এগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য আমি আপনাদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বমানের পর্যায়ে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন বিদেশী পুলিশ কর্মকর্তারাও বাংলাদেশে এসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে আগ্রহী হন।

তিনি আরও বলেন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আত্তিকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে এগিয়ে যেতে হবে। নতুন নতুন গবেষণা ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশকে সমৃদ্ধ হতে হবে।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বিকাশমান প্রযুক্তির বর্তমান বিশ্বে অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি সাইবার অপরাধ অতি দ্রুত বাড়ছে। সাইবার অপরাধীরা দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক এবং বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে এ ধরনের অপরাধ করছে, যা দমন করা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

জঙ্গি দমন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জঙ্গি দমন বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম প্রধান সাফল্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, অনলাইন জিডি, ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন ইত্যাদি সেবা জনগণ দ্রুত পাচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষও তাদের জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ এ কল করে দ্রুততম সময়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাচ্ছেন। ৯৯৯ সার্ভিসের উন্নয়নে এর কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করা ও উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার প্রয়োগ খুবই জরুরি।

তিনি করোনা মহামারিতে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে জনগণের পাশে থেকে সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় পুলিশ সদস্যদের প্রশংসা করেন।

অনুষ্ঠানে বঙ্গভবন প্রান্তে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়াম, রাজারবাগ প্রান্তে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, ড. বেনজীর আহমেদ এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এফজেড/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত