ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২২ মিনিট আগে
শিরোনাম

আগুন রাঙা ফাগুনে ভালোবাসা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:০৯  
আপডেট :
 ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:২৫

আগুন রাঙা ফাগুনে ভালোবাসা

আজ পয়লা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। সব অতীত পেছনে ফেলে নতুন কিছুর প্রত্যয়ে বর্ণিল সাজে আজ থেকে বদলে যাবে প্রকৃতি। আর কবির ভাষায় জানান দেবে ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’।

প্রকৃতিতে ফাল্গুনের হাওয়া, বাতাসে বসন্তের উন্মাদনা। ফাল্গুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। সেই সঙ্গে গানে আর অনুভূতিতে একইদিনে এসেছে ভালোবাসা দিবস। ঋতুরাজের হাত ধরে এসেছে ভালোবাসার দিনটি।

তীব্র শীতের কঠিন সময় পার করে প্রকৃতি যখন ডানা মেলে সেই আয়োজনকে বিভিন্ন দেশেই বরণ করা হয়। আমরা রঙিন পোশাকে বসন্তবরণ করি। সাধারণত বাসন্তী, হলুদ, লাল পোশাক পরে এদিন উৎসব আয়োজন হয়। পাশের দেশ ভারতে সাদা পোশাকে বসন্ত বরণ হয়। বুলগেরিয়ায় মার্চের ১ তারিখে বসন্ত ফিরে আসার দিনটি পালন করা হয়। লাল ও সাদা সুতায় তৈরি ছোট দুটি পুতুল বানিয়ে পরে থাকে প্রায় মাসজুড়ে।

বসন্তের প্রথম আভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফলের গাছে ঝুলিয়ে দেয়া হয় শুভ কামনা হিসেবে। চেরি ব্লসম ফেস্টিভ্যাল জাপানের বসন্ত উৎসব। এই সামাজিক যোগাযোগের যুগে বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের বসন্তের রাজ্যে বিচরণের ছবি এখন আমাদের সবারই চেনা।

আর এই বাংলায় বসন্ত মানেই পূর্ণতা। ‘দোলে প্রেমের দোলন চাঁপা হৃদয় আকাশে’যখন তখন এই বসন্ত মানেই প্রাণ চঞ্চলতা। কচিপাতায় আলোর নাচন। আবার বাঙালি জীবনে বসন্ত যেন অধিকার আদায়ের আওয়াজ নিয়ে হাজির হয়। বসন্ত আর আন্দোলনও মিলেমিশে একাকার।

বসন্তের আগমন বার্তা ১৯৫২ সালের সেই ফাল্গুন মনে করিয়ে দেয় যেদিন ‘পিচঢালা রাজপথে লাল ফুল হয়ে’ ভাষা শহীদেরা নিহত হয়েছিলেন শাসকের গুলিতে। বসন্তেই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পথে নেমেছিল। বসন্ত মনে করিয়ে আশির দশকের স্বৈরাচার প্রতিরোধ আন্দোলনে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের রক্তের কথা।

এই বসন্তেই ২০১৩ সালে এই প্রজন্ম জেগে উঠেছিল গণজাগরণে। যুদ্ধাপরাধের বিচার এই বাংলায় হতেই হবে দাবি নিয়ে আবারও এক হয়ে দেখিয়েছিল। তাই কেবল প্রকৃতি আর মনে নয়, বাঙালির জাতীয় ইতিহাসেও বসন্ত আসে বারবার।

আর ভালোবাসা দিবস? সে এক রূপকথার দেশ যেন। বসন্তে মন উতলা হয়, বসন্তে হাহাকার জাগে, প্রেম জাগে। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয় ভালোবাসা দিবস। প্রচলিত ইতিহাসটি হচ্ছে রোমের ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের। তিনি ছিলেন মানবপ্রেমিক ও খ্রিস্টধর্ম প্রচারক। রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস ছিলেন বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী। সম্রাটের পক্ষ থেকে তাকে দেব-দেবীর পূজা করতে বলা হলে ভ্যালেন্টাইন তা অস্বীকার করায় তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। সম্রাটের বারবার খ্রিস্টধর্ম ত্যাগের আজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করলে ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। সেই থেকেই দিনটির শুরু।

এদিকে ফাগুনের আগুনে, মন রাঙিয়ে বাঙালি তার দীপ্ত চেতনায় উজ্জীবিত হচ্ছে আজ। বাসন্তী রঙের শাড়ি, কপালে টিপ, হাতে চুড়ি, পায়ে নূপুর, খোঁপায় ফুল অথবা রিং জড়িয়ে আজ বেরিয়ে পড়বেন তরুণীর দল। প্রকৃতির সঙ্গে নতুন সাজে সাজবেন তারাও।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত