ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

হুইলচেয়ারে বন্দী অপূর্ণর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন

  কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬:১৩

হুইলচেয়ারে বন্দী অপূর্ণর ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন
ছবি: নিজস্ব

হুইলচেয়ারে বসেই জীবনের সাথে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন অপূর্ণ। হুইলচেয়ারের মধ্যেই মাচা দিয়ে বানিয়েছেন ছোট্ট দোকান। তাতেই বিক্রি করছেন চিপস, চানাচুর, আচার, চকলেটসহ অন্যান্য সামগ্রী। তার এই ক্ষুদ্র আয়ে চলে পরিবারের খোরাক। সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট সংলগ্ন রাস্তায় দেখা যায় এমন চিত্র। স্কুল যাওয়ার বয়সে জীবন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন ১৫ বছর বয়সী নয়ন।

জন্মের পর থেকেই দুই পা এবং এক হাত অচল নয়নের। হাঁটতে না পারায় কখনো স্কুলের বারান্দায় যেতে পারেননি। ব্রাক স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়লেও তার নানা প্রতিবন্ধকতার কাছে হার মানে পড়ালেখা। ঝরে পড়েন স্কুল থেকে। বড় হয়ে হতে চায়েছিলেন ডাক্তার। কিন্তু সে স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল। পরিবারের অভাবের কারণে হুইলচেয়ারে বসেই ধরেছেন পরিবারের হাল৷ দৈনিক আয়ের টাকাই নিজের চিকিৎসা এবং পরিবার চালিয়ে যাচ্ছেন।

নয়নের বাড়ি কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার সালমানপুর গ্রামে। চার ভাই-বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। ১০ বছরের ছোট বোন তানিয়াও মানষিক প্রতিবন্ধী। বাবা পেশায় দিনমজুর এবং মা গৃহিণী। চার ভাই-বোনের ভরণপোষণ নিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন দিনমজুর বাবা। তাই পরিবারের পাশে দাড়ানোর জন্য হুইলচেয়ারকেই জীবিকার বাহন বানিয়েছেন নয়ন।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গেট সংলগ্ন রাস্তা এবং শালবনের আশেপাশে প্রায়ই দেখা যায় নয়নকে। মা রাশেদা বেগম হুইলচেয়ার ঠেলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যান নয়নকে।

মা রাশেদা বেগম দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী আমার ছেলে। তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ করা হয়েছে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। বড় হলে ডাক্তার বানাবো ভেবেছিলাম। কিন্তু সেই স্বপ্ন অপূর্ণ রয়ে গেল। বন্দী হয়ে রইলো চেয়ারে। আমাদের সমাজে ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণযোগ্য পেশা নয়। তাই ভাবলাম ঘরে বসে না থেকে যদি কোন কাজ করে তাহলে তা পরিবারের কাজে আসবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত