ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিশুদের আনাগোনায় মুখরিত বইমেলা

  ছৈয়দ মোছাদ্দেকুন নবী

প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪:১৮  
আপডেট :
 ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২১:২৫

শিশুদের আনাগোনায় মুখরিত বইমেলা
ছবি: প্রতিনিধি

আজ শুক্রবার ২৫ ফেব্রুয়ারি, বইমেলার ১১তম দিন এবং দ্বিতীয় শুক্রবার। মেলার প্রত্যেক শুক্রবারের প্রথম প্রহরকে ‘শিশু প্রহর’ ঘোষণার একটি রেওয়াজ চালু আছে। গতবছর করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় শিশুপ্রহর রাখা হয়নি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে গত শুক্রবারও ছিল না শিশুপ্রহর। সরকার সবধরণের বিধিনিষেধ তুলে দিলে আজ মেলার শিশুচত্বরে শিশুপ্রহরের আয়োজন করা হয়। আগত শিশু-কিশোরদের কোলাহোলে মুখরিত হয়ে আছে শিশুচত্বর।

কেমন চলছে শিশুপ্রহর

মেলায় শিশু নিয়ে ঘুরতে আসা মোহাম্মদ ইফতেখারুল আমিন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘আজকে শিশুপ্রহরে আমি আমার বাচ্চাকে নিয়ে এসেছি। বাঙালি সংস্কৃতির প্রধান একটি উৎসব এই বইমেলা। আমি নিজেই ছোটবেলার ছাত্রজীবন থেকে বইমেলায় আসতাম। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের যে ইতিহাস ও সংস্কৃতি তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি। শুক্রবার সকালটা শিশুদের জন্য নির্ধারিত থাকার কারণে অনেক শিশুই এসেছে। দেখে খুব ভালো লাগছে।’

বইমেলায় শিশুপ্রহর কেমন ভূমিকা রাখছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বই পড়ার অভ্যাস তৈরিতে বইমেলার শিশুপ্রহর একটা বড় ভূমিকা রাখছে। আমাদের সকলের উচিত শিশুদের নিয়ে বইমেলায় আসা। এই চর্চাগুলো তারা আমাদের সঙ্গে এসেই শিখবে। এই বইমেলা শিশুদের চিন্তাচেতনাকে সমৃদ্ধ করবে।’

বাবার সাথে ঘুরতে এসেছে শিশু সামিন ইয়াসার আমিন। সামিন বলে, ‘আজকে আমি বাবার সাথে বই কিনতে এসেছি। আজকে আমি ৬টি বই কিনেছি। এখন সিসিমপুর দেখতে যাব। আমার এখানে অনেক ভালো লাগছে।’

শিশুচত্বরে সিসিমপুর

শিশুপ্রহরকে ঘিরে নানা ধরণের শিশুতোষ অনুষ্ঠান পালিত হয়। আজ শিশুতোষ ধারাবাহিক সিসিমপুরের প্রদর্শনী চলছে শিশুচত্বরে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে কেন্দ্র করে অন্তত এক শতাধিক শিশু শিশুচত্বরের জড়ো হয়। সেখানে তারা তাদের পছন্দের টুকটুকি, হালুম, ইকরি, শিকুকে মঞ্চে দেখছে। উৎসাহ উদ্দীপনার শেষ নেই তাদের। শিশুদের সাথে উৎসুক তাদের ‌অভিভাবকগণও। বাচ্চাকে কাঁধে নিয়ে ছবি তুলে শিশুপ্রহর মুখরিত রেখেছেন সকলে।

শিশুতোষ বইয়ের বিক্রি ভালো

শিশুপ্রহরকে কেন্দ্র করে শিশুতোষ বইও ভালো বিক্রি হচ্ছে বলে জানান একাধিক বিক্রয়কর্মী। তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুধু শিশুচত্বরের স্টলগুলোতে ভালো ভিড়, অন্যান্য স্টলগুলো কিছুটা জনশূন্য। শিশুরা ঘুরছে, বই কিনছে, ছবি তুলছে।

নলেজ মিডিয়া পাবলিকেশনের ফিরোজ মিয়া বলেন, ‘শিশুপ্রহরে আজ বেশ ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। শিশুচত্বরে সিসিমপুর আসায় একটু প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে বইমেলা। আজকে ভালোই শিশুদের বই বিক্রি হয়েছে।’ তিনি জানান শিশুরা ভূতের গল্প, কমিকবুক, ছড়া ও শিশুদের ছোটগল্পের বই বেশি কিনছে।

টুনটুনি প্রকাশনের বিক্রয়কর্মী সুমাইয়া বলেন, ‘শিশুদের বই ভালোই বিক্রি হচ্ছে। এদিকে সিসিমপুর অনুষ্ঠান চলায় সব শিশুরা সেখানে গিয়ে জড়ো হয়েছে। আশা করা যায় অনুষ্ঠান শেষে এবং বিকেলবেলায় বই আরও ভালো বিক্রি হবে।’

পাশাপাশি বাংলা একাডেমির শিশুপ্রহরের আয়োজন করাকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট ও মেলায় আগতরা।

উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় গত শুক্রবার বইমেলায় শিশুপ্রহরের আয়োজন ছিলো না। তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার সব বিধিনিষেধ তুলে দিলে মেলার দ্বিতীয় শুক্রবার শিশুপ্রহরের আয়োজন করা হয়।

বিক্রয়কর্মী ফিরোজ বলেন, ‘আজকে শিশুপ্রহর রাখাটা একটা ভালো উদ্যোগ। আমাদের স্টলগুলো শিশুকেন্দ্রীক। শিশুরা না আসলে খুব একটা ভালো বিক্রি করা যায় না। আজকে শিশু প্রহর হওয়াতে আমরা গত শুক্রবারের চাইতে ভালো সাড়া পাচ্ছি। এটা আসলেই প্রশংসার দাবি রাখে।’

পাশাপাশি মেলার সময় বাড়ানোর ব্যাপারেও ইতিবাচক ইচ্ছাপ্রদান করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘মেলার সময় বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে। আমরা শুনেছি ১৭ মার্চ পর্যন্ত মেলা বাড়ানো হতে পারে। এমন হলে আমরা আরও শিশুপ্রহর পাব এবং আমাদের বিক্রয়ও অনেক ভালো হবে।’

মেলায় ২ সন্তান নিয়ে আগত শামীমা জাহান বলেন, ‘দেশে এখন সবকিছুই খোলা। পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে বলা চলে। সুতরাং বইমেলা চালু রেখে শিশু প্রহর বন্ধ রাখার কোনো যৌক্তিকতা থাকে না। বাংলা একাডেমি শিশুপ্রহর চালু করার যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটা প্রশংসনীয়। ঘরে বসে থেকে বাচ্চারা বোর হয়ে যায়। আজকে এখানে এসেছে, অনুষ্ঠান দেখছে, বই কিনছে। এভাবেই তো তাদের বেড়ে উঠা উচিত।’

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত