ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

সূর্যের আগুন ঝরা রোদে সোনালী রঙ ছড়িয়ে দিচ্ছে সোনালু

  বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২২, ১২:৩৩

সূর্যের আগুন ঝরা রোদে সোনালী রঙ ছড়িয়ে দিচ্ছে সোনালু
ছবি: প্রতিনিধি

সূর্যের আগুন ঝরা রোদে যেন সোনালী রঙ ছড়িয়ে যাচ্ছে। কিশোরীর কানের দুলের মতো মৃদু বাতাসে দুলছে থোকা থোকা ফুল। আবার ফুলের ফাঁকে সূর্যের রশ্মিতে ফুটিয়ে তুলছে প্রকৃতি।

হলুদ বরণ সৌন্দর্যে মাতোয়ারা করে রাখেছে চারপাশ। সবুজ কচি পাতার ফাঁকে হলুদ বর্ণের ফুল প্রকৃতিকে যেন সাজিয়ে তুলেছে নিজের মত করে। এতক্ষণ বলা হচ্ছিল সোনালী আভার সোনালু ফুলের কথা।

গোপালগঞ্জে এই ফুল সোনালু ফুল নামে বেশ পরিচিত। সোনালু বা বানরলাঠি বা বাঁদরলাঠি নামে পরিচিত এ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Cassia fistula এবং Albizia inundata। এটি সোনালী রঙের ফুলবিশিষ্ট বৃক্ষ। উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাসে Fabaceae গোত্রের এ বৃক্ষের ফল লম্বাটে। সোনালী রঙের ফুলের বাহার থেকেই ‘সোনালু’ নামে নামকরণ।

ইংরেজি ভাষায় একে বলা হয় golden shower, Purging Cassia, Indian Laburnum বা Pudding-Pipe Tree. এ ফুলের আদিনিবাস হিমালয় অঞ্চল ধরা হলেও বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও মায়ানমার অঞ্চল জুড়ে রয়েছে এর বিস্তৃতি। অস্ট্রেলিয়ায় নিউ সাউথ ওয়েলস ও কুন্সল্যান্ডের উষ্ণ অঞ্চলে এদের প্রচুর দেখা মেলে।

গোপালগঞ্জ জেলা শহরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সরকারি বিনাপানি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে এই সোনালু ফুলের দেখা মিলছে।

গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে প্রাণের সজীবতা নিয়ে যেসব ফুল ফোটে তার মধ্যে সোনালু অন্যতম। তীব্র খরতাপে পথের পথিকের দৃষ্টি কাড়ছে এই ফুল। অনেকেই দাঁড়িয়ে এ ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন। অনেকই আবার এ ফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে গাছ থেকে নিয়ে যাচ্ছেন সোনালু ফুল।

সোনালু ফুলের ঝলমলে রূপ দেখে মনে হয় কোন রূপসী কন্যা এইমাত্র হলুদের পিঁড়িতে বসেছে। পুরো গাছ থেকে হলুদ যেন বাতাসে মিশে উড়ে যাচ্ছে।

শীতে সমস্ত পাতা ঝরে গিয়ে সোনালু গাছ থাকে পত্র শূন্য এবং বসন্তের শেষে ফুল কলি ধরার পূর্বে গাছে নতুন পাতা গজায়। গ্রীষ্মকালে যখন সব গাছে একসাথে সোনালী ফুল ফোটে, তখন মনে হয় সোনালী আলোকচ্ছটায় চারপাশ আলোকিত হয়ে গেছে।

সোনালু গাছ আকারে ছোট হলেও ডালপালা ছড়ানো-ছিটানো। দীর্ঘ মঞ্জুরিদণ্ডে ঝুলে থাকা ফুলগুলোর পাপড়ির সংখ্যা পাঁচটি। সবুজ রঙের একমাত্র গর্ভকেশরটি কাস্তের মতো বাঁকানো। এ গাছের ফল বেশ লম্বা, লাঠির মতো গোল।

জেলা শহরের বাসিন্দা সজীব বিশ্বাস বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাশের এ পথ দিয়েই আমার আসা যাওয়া। প্রতিদিনই আসা যাওয়ার পথে সোনালু ফুলের হলুদ সৌন্দর্য উপভোগ করছি। মন আর প্রাণ যেন জুড়িয়ে যায় এর সৌন্দর্যে।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বাসিন্দা মেহেদী হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে সোনালু ফুলের গাছ রয়েছে। যখন এ ফুল তার সৌন্দর্যের মাধ্যমে হলুদ আভা ছড়ায় তখন এ দৃশ্য মন আর প্রাণ কেড়ে নেয়। প্রকৃতির সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত