ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার

সাত মাসের সন্তানকে ছুড়ে মেরে বাড়িঘর উচ্ছেদ

  দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২২, ১৮:৩৮

সাত মাসের সন্তানকে ছুড়ে মেরে বাড়িঘর উচ্ছেদ
ছবি: প্রতিনিধি

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বরকামতা গ্রামে প্রতিপক্ষের বাড়ি দখলকে কেন্দ্র করে একটি পরিবারের ওপর হামলা ও ব্যাপক ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। খাবার টেবিল থেকে নারীদের চুল ধরে টেনে-হিঁচড়ে করে বের করাই নয়, মায়ের কোল থেকে ৭ মাসের কন্যাসন্তানকে ছিনিয়ে নিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ।

গত বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে উপজেলার বরকামতা গ্রামের স্বর্ণপাড়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কুলসুম বেগমের বাড়িতে তার চাচাতো ভাই রহমানসহ অন্যান্যরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ। স্থিতাবস্থায় বজায় রাখাতে আদালতের নির্দেশনা থাকলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কুলসুম বেগমের ছেলে সাকিব এসব কথা তুলে ধরেন।

ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে কুলসুম বেগমের ছেলে সাকিব বলেন, গত ১২ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) আমরা তখন দুপুরের খাবার খেতে বসেছিলাম। আমার মা কুলসুম বেগম, আমার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম, ছোট বোন সানজিদা আক্তার, আমার একমাত্র কন্যা ৭ মাসের মেহেরুন খাবার টেবিলে ছিল। হঠাৎ একদল সন্ত্রাসী এসে সূর-চিৎকারে আতঙ্ক ছড়িয়ে বাড়িঘরে হামলা চালায়। খাবার টেবিল থেকে নারীদের চুলের মুঠি ধরে টানা-হেঁচড়া, কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে ঘর থেকে বের করে দেয়।

‘আমার ৭ মাসের সন্তান মেহেরুনকে ঘাড়ে ধরে তার মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বাহিরে ছুড়ে ফেলে দেয়। ওরা আমাদের বাড়িঘর নিশ্চিহ্নই নয়, টয়লেটের ইটগুলোও খুলে নেয়। পানির কল, ভিটির মাটি, কয়েকশ' ফলজসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে সমস্ত মালামাল ভ্যানগাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। তারা আমাদের ঘরের আসবাপত্র, স্বর্ণালঙ্কার, টাকাসহ প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ভাঙচুর ও লুট করে নিয়ে যায়।’

সাকিব আরও বলেন, আমার মা-বাবার একমাত্র সন্তান হিসেবে পৈত্রিক ভিটাতে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন। আর ওই বাড়ির অংশটি আমার মায়ের অজান্তে তথ্য গোপন করে আমার মায়ের চাচাতো ভাই মোহন মিয়া নিজ নামে বিএস রেকর্ড করিয়ে নিয়েছিল। পরবর্তিতে জানতে পেরে ওই বিএস রেকর্ডের বিরুদ্ধে আদালতে আমার মা মামলা করেন। আদালত ওই জায়গার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী বলেন, থানা পুলিশ আমাদের কোনো আইনি সহায়তা দেননি। বাড়িঘর ভাংচুরের আগে অর্থাৎ ঘটনার দিন থানা পুলিশকে আদালতের দেয়া স্থিতাবস্থায় বজায় রাখার জন্য ১৪৪ ধারার নোটিশটি পৌঁছে দেয়ার পরও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি আমাদের বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট এবং উচ্ছেদের পরিস্থিতিতে সহায়তা চাইলে পুলিশ কোনো সহযোগীতা করেনি। অনেক চাপাচাপির পর ঘটনার পরদিন যাবে বলে আমাদের বিদায় করে দেন।

মোঃ আব্দুর রহমান, মোঃ নজু মিয়া, মোঃ তারেক মিয়া, মোঃ আনিস মিয়া, মোঃ মমিন মিয়া, মোঃ জহির মিয়ার নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা ৩/৪শ' লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই হামলা চালিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন সাকিব।

তিনি আরও বলেন, এ পরিস্থিতিতে আমাদের পরিবারের সদস্যরা গৃহহারা হয়ে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আজকের এ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট সুষ্ঠু বিচার ও আমাদের সঠিক প্রাপ্যটা বুঝে পেতে হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী সাকিবের মা কুলসুম বেগম, সাকিবের ভাই মোঃ শাহিন, স্ত্রী সুরাইয়া বেগম, বোন সাঞ্জিদা আক্তার, মামা মোঃ ইউছুফ মিয়া, ইউছুফ মিয়ার স্ত্রী সেলিনা বেগম প্রমুখ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত