ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

পীরের মাথার চুল কেটে আওয়ামী লীগ নেতার নির্যাতন, গ্রেপ্তার ৩

  বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২২, ১৬:৫৭

পীরের মাথার চুল কেটে আওয়ামী লীগ নেতার নির্যাতন, গ্রেপ্তার ৩
গ্রেপ্তারকৃত তিনজন

বগুড়ার শেরপুরে পরকীয়ার মিথ্যা অভিযোগে চিশতিয়া তরিকার পীরে কামেল হাফিজুর রহমানের (৩৮) মাথার চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামের ইমান আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৭), আক্কেল মুন্সীর ছেলে আবুল হোসেন (৬০) ও ফরিদ উদ্দিন শেখের ছেলে মিজানুর রহমান মিষ্টার (৪০)।

হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার শেরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। চুল কেটে দেয়ার ঘটনা ঘটে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের হামছায়াপুর গ্রামের একটি বাড়ির আস্তানায়।

ভুক্তভোগী হাফিজুর রহমান লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে।

উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য রবিউল ইসলাম বাবু ও তার ৬ সহযোগীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়েছে মামলায়। শুক্রবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, তিশতিয়া তরিকার পীরে কামেল হাফিজুর রহমান বিগত কয়েকদিন আগে শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের হামছায়াপুর গ্রামের একটি বাড়িতে আস্তানা গড়েন। গত ২১ জুন (মঙ্গলবার) দিবাগত রাতে ভাগ্নি কোহিনুর আক্তারের দাওয়াতে নওদাপাড়া গ্রামের বাড়িতে যান হাফিজুর এবং সেখানেই রাত্রি যাপন করেন। কিন্তু পরদিন বুধবার সকালে ওই পীরকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে শাহবন্দেগী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য রবিউল ইসলাম বাবু ও তার সহযোগী মিস্টার, আনোয়ার হোসেন, আবুল হোসেন, নয়ন হোসেন ও রায়হান হোসেন। ঘুম থেকে ওঠার পর হাফিজুরকে আসামিরা বলেন, কোহিনুর বেগমের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক আছে। এই কথা বলে তাকে মারধর করতে থাকে। এমনকি সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর দিতে নির্দেশ দেয়া হয়। এতে রাজি না হওয়ায় হাফিজুর রহমানের মাথার চুল কেটে দেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সহযোগীরা।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, এ সময় হাফিজুরের কাছে থাকা নগদ ৩৫ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন, স্বর্ণের চেইন ও আংটি ছিনিয়ে নেয় তারা। পাশাপাশি তাকে দ্রুত এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে চলে যান তারা। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

মামলার বাদী ভুক্তভোগী হাফিজুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, কোহিনুর সম্পর্কে আমার ভাগ্নি। তার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার জন্য গিয়েছিলাম। এক আওয়ামী লীগ নেতাসহ গ্রামের কয়েকজন যুবক আমাকে সকালে ঘুম থেকে ডেকে তুলে কহিনুরের সঙ্গে আমার অবৈধ সম্পর্ক আছে বলে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। এমনকি তাদের প্রস্তাবে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে রাজি না হওয়ায় আমার মাথার চুল কেটে দিয়েছে। সেইসঙ্গে আমার নিকটে থাকা নগদ টাকাসহ মালামাল ছিনিয়ে নিয়েছে। তাই ন্যায়বিচার পেতে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনাটি জানার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পীর হাফিজুর থানায় একটি মামলা করেছেন। সেই মামলায় এজাহার নামীয় আসামিদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত