ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

পদ্মা সেতু পার হওয়া প্রথম নারী বাইকার

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২২, ১২:০৬

পদ্মা সেতু পার হওয়া প্রথম নারী বাইকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার উদ্বোধন করেছেন স্বপ্নের পদ্মা সেতু। রোববার ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে উন্মুক্ত করা দেয়া হয় জনসাধারণের চলাচলের জন্য।

এর আগে সেতুর দুই প্রান্তে ভিড় করতে থাকে বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ছোটবড় যানবাহন। সকাল ৬টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সেতু পার হতে থাকে এসব যানবাহন।

এরই মধ্যে পদ্মা সেতু পাড়ি দেয়া প্রথম যানবাহন এবং চালকদের ব্যাপারে জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছেন একজন লেডি বাইকারও। তার নাম রুবায়াত রুবা। নারী বাইকার হিসেবে প্রথম পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েছেন তিনি।

অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে রুবায়াত রুবা নামের ওই নারী বাইকার বলেন, ‘যেহেতু প্রথম, তাই খুব এক্সাইটেড ছিলাম। যদিও রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিল, এটা স্বাভাবিক। অন্য হাইওয়েতে যেমন ভিড় থাকে, ওরকমই ছিল। বেশি সময় লাগেনি, যেহেতু বাইকের একটা আলাদা সারি আছে।’

রুবায়াত আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি কর্তৃপক্ষকে বলব, যেন নিয়ম-কানুনগুলোর দিকে নজর দেন। উলটো দিকে গাড়ি আসা দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ, এসব কিছু যেন না হয়। আর যতই আইন-কানুন করা হোক, আমরা জনগণ যদি সচেতন না হই, তাহলে লাভ নেই। আমাদের সবাইকেই সতর্ক হতে হবে। আমার একটা অনুরোধ থাকবে, সবাই যেন ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলে।’

এদিকে, প্রথম দিন এমন একটি অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে পেরে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে চালক ও যাত্রীদের মধ্যে। অন্যদিকে, কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে—পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের যথাযথ প্রস্তুতি রয়েছে।

পদ্মা সেতুর কর্মীরা বলছেন, ‘আমরা সকাল ৬টা থেকে কাজ শুরু করেছি। সেতু উন্মুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত অনেক যানজট ছিল। কিন্তু, আমরা সামলে নিয়েছি। এখন সব আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং সবাই অনেক খুশি। পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করছে।’

অনেকেই শখের বশে পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য এসেছেন। পাঁচটি কাউন্টারের মাধ্যমে টোল আদায় করা হচ্ছে।

এদিকে গত ২৩ জুন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের জারি করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর ওপর অনুমোদিত গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার, পদ্মা সেতুর ওপর যেকোনও ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তোলা/হাঁটা সম্পূর্ণ নিষেধ। তিন চাকাবিশিষ্ট যানবাহন (রিকশা, ভ্যান, সিএনজি অটোরিকশা ইত্যাদি), হেঁটে, সাইকেল বা নন-মটোরাইজড গাড়ি যোগে সেতু পারাপার হওয়া যাবে না। গাড়ির বডির চেয়ে বেশি চওড়া এবং ৫.৭ মিটার উচ্চতার চেয়ে বেশি উচ্চতার মালামালসহ যানবাহন সেতুর ওপর দিয়ে পারাপার করা যাবে না। সেতুর ওপরে কোনও ধরনের ময়লা ফেলা যাবে না বলেও জানানো হয়।

পদ্মা সেতু পারাপারে সরকার নির্ধারিত টোল হার অনুযায়ী- পদ্মা সেতু পারাপারে মোটরসাইকেলে ১০০ টাকা, গাড়ি ও জিপে ৭৫০ টাকা, পিকআপে এক হাজার ২০০ টাকা এবং মাইক্রোবাসে এক হাজার ৩০০ টাকা টোল পরিশোধ করতে হবে। বাসের ক্ষেত্রে ছোট বাস (৩১ আসন) এক হাজার ৪০০ টাকা, মাঝারি বাস (৩২ আসন বা এর বেশি) দুই হাজার টাকা, বড় বাস (থ্রি-এক্সেল) দুই হাজার ৪০০ টাকা, ট্রাককে (পাঁচ টন পর্যন্ত) এক হাজার ৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে (পাঁচ টনের বেশি ও সর্বাধিক আট টন পর্যন্ত) দুই হাজার ১০০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (আট টনের বেশি এবং সর্বাধিক ১১ টন) দুই হাজার ৮০০ টাকা, ট্রাকে (থ্রি-এক্সেল পর্যন্ত) পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা এবং ট্রেইলারকে (ফোর-এক্সেল পর্যন্ত) ছয় হাজার টাকা টোল দিতে হবে।

সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘সকাল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে যানবাহন পারাপারের জন্য পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা খুলে দেয়া হয়।’

তিনি জানান, টোল প্লাজা খোলার পর প্রথম দিকে মোটরসাইকেলের চাপ ছিল বেশি। কিন্তু, পরে বাস-মিনিবাস-প্রাইভেটকার ও ট্রাকের দীর্ঘ সারি হয়ে যায়। তবে, পদ্মা সেতু পার হওয়া ও দেখার জন্য উৎসুক জনতার সংখ্যাই বেশি।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত