ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

গোপনে জিও ব্যাগ সরাতে চাইল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, আটকে দিল এলাকাবাসী

  মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২২, ২৩:৩৫

গোপনে জিও ব্যাগ সরাতে চাইল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, আটকে দিল এলাকাবাসী
ছবি: প্রতিনিধি

এবার খুব পোপনীয়তার সঙ্গে জিও ব্যাগ সরাতে চাইলো একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। জিও ব্যাগের বালু নদীতে ফেলে দিয়ে খালি বস্তা ট্রাক বোঝাই করে নিতে গিয়েই ঘটলো বিপত্তিকর ঘটনা।

খবর পেয়ে কুলাউড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে পৌঁছে জিও ব্যাগ যেখানে আছে সেখানেই রাখার নির্দেশ দেন।

এদিকে মৌলভীবাজারের প্রধান খরস্রোতা মনু নদীর ভাঙন রোধে এবং বন্যার স্থায়ী সমাধানে “মনু নদের ভাঙন থেকে কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর রক্ষা” প্রকল্পের হাজার কোটি টাকার কাজে অনিয়মের অন্ত নেই।

কয়েক দফায় হাতেনাতে স্থানীয়রা অনিয়ম ধরার পরেও এখনও আমলে নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এমন উদাসীনতা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে গত ২৯ জুন সকালে মনু নদীর কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের বেলেরতল সাইট থেকে ভরাট করা জিও ব্যাগ খালি করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা জিও ব্যাগ ভর্তি একটি ট্রাক আটক করেন।

এর আগে গত ২০ জুন রাজনগর উপজেলার আদনাবাদ এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নদীতে পানি বাড়ার সাথে সাথে ভাঙন ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে জিও ব্যাগ না ফেলে রাতের আধাঁরে টাস্কফোর্সের গণনাকৃত হাজারের উপরে জিও ব্যাগ মনু নদীর স্রোতের সাথে ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।

এছাড়াও ব্লক নির্মাণের পূর্বে ব্যবহারকৃত নিম্ন মানের পাথর ব্যবহার অভিযোগ রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ‘মনু নদের ভাঙন থেকে কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর রক্ষা’ নামে ওই প্রকল্প ২০২০ সালের জুন মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন লাভ করে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৯’শ ৯৬ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা। ২০২৩ সালের জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ২ বছরে মাত্র ২৩ শতাংশ কাজ হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে বেশির ভাগ কাজ ভেসে গেছে নদীর স্রোতে।

ধলিয়া গ্রামের (বেলেরতল) বাসিন্দা কয়েছ ও আব্দুস শাহিদ সহ অনেকেই বলেন, পানি বাড়ার সময় ঠিকাদারের লোকজন জিও ব্যাগ খালি করে। আমরা ভাবছিলাম হয়তো এগুলো এখানে রাখবে কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন রাস্তা ঠিক করার সাথে সাথে ভোরবেলা গোপনে সেগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা গাড়িসহ জিও ব্যাগ আটকাই।

সাবেক ইউপি সদস্য মো. আব্বাস আলী বলেন, ঠিকাদারের লোকজন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় প্রতারণা করছে। সরকারের এই মেগা প্রকল্পের কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্পূর্ণ উদাসীন।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরাদানা কোম্পানী লিমিটেড এর সুপারভাইজার আবিদ বলেন, স্থানীয়দের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরবর্তী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কুলাউড়া উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান এম জিয়াউর রহমান চৌধুরী ফুল মিয়া বলেন, গণনাকৃত নাম্বারিংয়ের জিও ব্যাগ অন্যত্র নেয়ার সময় স্থানীয়রা বাঁধা দেন। পরবর্তীতে কুলাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসানের উপস্থিতিতে জিও ব্যাগ আটকানো হয়।

কুলাউড়া উপজেলা সহাকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান বলেন, ৫ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ এখানেই থাকবে। বালু কোথায় থেকে আসবে পরবর্তীতে আলোচনা করে দেখা যাবে।

নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ঠিকাদার দুইটি সাইটে কাজ করছে। ওই সাইটে বালু না পাওয়ায় সে অন্য সাইটে জিও ব্যাগ নিতে চেয়ে ছিল। এলাকাবাাসীর বাঁধার প্রেক্ষিতে তাকে নিষেধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত