এআইপি মর্যাদা পেলেন পেঁপে বাদশা
পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২২, ২১:৫৩
পাবনা জেলা থেকে প্রথম কৃষক হিসেবে এআইপি (এগ্রিকালচারাল ইমপর্টেন্ট পার্সন) এর সম্মান অর্জন করলেন খ্যাতিমান কৃষক আলহাজ্ব শাহজাহান আলী বাদশা ওরফে পেঁপে বাদশা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।
বাদশা ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের বাসিন্দা। বক্তারপুর গ্রামের মাঠে তার সুবিশাল কৃষি খামার রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএ) এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ আখচাষি ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক।
কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্র জানায়, কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রথমবারের মতো সারা দেশের ১৩ জন কৃষক-কৃষাণিকে ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি- এআইপি’ সম্মাননা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে শাহজাহান আলী বাদশা রয়েছেন। সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিরা সিআইপিদের মতো সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে নব্বই দশকের গোড়ার দিকে অল্প কিছু জমিতে পেঁপে চাষ শুরু করেন বাদশা। এতে লাভবান হতে থাকেন। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই ৪০ বিঘা জমিতে পেঁপে বাগান করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। সারা দেশে ‘পেঁপে বাদশা’ বলে তিনি পরিচিতি লাভ করেন।
তিনি ১৯৯৯ সালে কৃষিতে সর্বোচ্চ পদক বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদকে ভূষিত হন। এখন তার বাগানের পরিধি দুইশ’ বিঘার বেশি। তিনিই দেশে ১ম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মেওয়া বা শরিফা ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন। তিনি নানা রকম উন্নত জাতের দেশি- বিদেশি ফলমূল ও শাক-সবজি চাষ করেন। কৃষি বিভাগ চাষিদের প্রশিক্ষণের সময় তার খামারে কৃষি সফর করিয়ে তাদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
শাহজাহান আলী বাদশা ওরফে জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে চাষিদের জাতীয়ভাবে মর্যাদা দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তিনি স্বীকৃতি পেয়ে আনন্দিত বলে জানান। তিনি কৃষিমন্ত্রী ও কৃষি বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, দেশের জেলা উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা আয়োজনের মাধ্যমে চাষিদের যেন সম্মানিত করা হয়। আর চাষিরা যেন ফসলের ন্যায্য দাম পান সেদিকে সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপ-পরিচালক ড. সাইফুল আলম জানান, শাহজাহান আলী বাদশা ওরফে পেঁপে বাদশা পাবনার একজন পথিকৃৎ চাষি। তিনি এমন একজন কৃষক যে, তার নামের সাথে মানুষ একটি ফসলের নাম সংযুক্ত করে দিয়েছেন। তাকে কৃষি বিভাগ এআইপি হিসেবে সম্মানিত করেছেন। তিনি পেঁপে বাদশাকে অভিনন্দন জানান।
উল্লেখ্য, এআইপিরা সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য পাবেন বিশেষ পাস। বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান ও সিটি কিংবা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন কর্তৃক আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন। বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে সরকার পরিচালিত গণপরিবহনে পাবেন আসন সংরক্ষণের অগ্রাধিকার। এআইপিরা ব্যবসা বা দাপ্তরিক কাজে বিদেশ ভ্রমণের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভিসাপ্রাপ্তির নিমিত্তে বিশেষ সুবিধা পাবেন। একজন এআইপি তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, মা, বাবা ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন সুবিধাপ্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে