ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২২ মিনিট আগে
শিরোনাম

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

  ফরিদুর রেজা খান

প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২২, ১৫:৩৫  
আপডেট :
 ০৭ আগস্ট ২০২২, ১৫:৩৬

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
ছবি: প্রতিনিধি

জ্বালানি তেলের আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদ সংলগ্ন মুরাদ চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা ‘জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি কেনো, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আগের দামে তেল দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। মিছিল শেষে বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কে অবস্থান নেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটক থেকে সিএন্ডবি পর্যন্ত একটি লেনে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে যানজট তৈরি হয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, ‘দেশে এখন উৎসবের মতো করে সব কিছুর দাম বাড়ানো হচ্ছে। রিজার্ভের টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে, দেশ চালানোর জন্য নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করে মধ্য ও নিম্নবিত্তদের শোষণ করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘যেখানে সারাবিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, সেখানে আমাদের দেশে উল্টো তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এসবের পক্ষে নানান খোঁড়া যুক্তিও দাঁড় করানো হচ্ছে।’

চলচ্চিত্র আন্দোলনের সহ-সভাপতি অংশুমান রায় বলেন, ‘গত ১৪ বছর ধরে আমরা স্বৈরশাসনের মধ্যে বাস করছি। জনগণের উপর নানা ধরনের নিপীড়ন চলছে, সাথে যোগ হয়েছে মূল্যবৃদ্ধি। বৈশ্বিক পরিস্থিতিসহ নানান দোহাই দিয়ে এটিকে জায়েজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিষ্কারভাবে বলা হচ্ছে না কী কারণে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে, এখানে বিপিসি বা অন্যদের লাভ ও কর, ভর্তুকির পরিমাণ কত। এসবের কোনো স্বচ্ছ জবাবদিহিতা নেই।’

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক তাসবিবুল গনি নিলয় বলেন, ‘বিশ্ববাজারে যেখানে তেলের দাম কমানো হয়েছে সেখানে বাংলাদেশে জোর করে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। সরকারের দায়িত্ব যেখানে জনগণের ভোগান্তি কমানো, সেখানে তারা মন্ত্রী-আমলাদের পকেট গরম করাতেই দৃষ্টি দিচ্ছে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এর দেয়া লোনের শর্ত পূরণ করতে তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে যেটা আমাদের জনগণের জন্য একটা দুঃখ। দিনের পর দিন নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে গরিব-মধ্যবিত্তদের পক্ষে দুবেলা খাওয়া ও সন্তানদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না। এবার জ্বালানি তেলের এই হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি পরিবহন খাত থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

সমাপণী বক্তব্যে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের কথা ভাবে বললেও হুটহাট নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর দাম বাড়ায়। এসবের পক্ষে তাদের অনেক আহাম্মকি আমরা কথাও আমরা শুনে থাকি। ক্ষমতায় থাকা সরকার জনগণের কোনো কথারই তোয়াক্কা করছে না। আমরা দেশবাসী গরিব থেকে আরও গরিব হচ্ছি। আমাদের জীবনযাপনের খরচ বাড়লেও আমাদের আয় বাড়ছে না। আমরা মূলত ক্রমশ অন্ধকারের দিকে যাচ্ছি। যদি চুপ থাকেন তাহলে অন্ধকার থেকে কেউই আপনাদের বাঁচাতে পারবে না।’

প্রায় আধ ঘণ্টা অবস্থানের পর ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ছেড়ে দাঁড়ালে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত