ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

একান্তে সময় কাটাতে গিয়ে শেকলবন্দি পরকীয়া প্রেমিক জুটি

  পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২২, ০১:৪৪

একান্তে সময় কাটাতে গিয়ে শেকলবন্দি পরকীয়া প্রেমিক জুটি
ছবি: প্রতিনিধি

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অনৈতিক কাজের সময় এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েছে পরকীয়া প্রেমিক যুগল। তাদেরকে সারা রাত শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলো স্থানীয়রা।

শুক্রবার রাতে উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের করোকোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার সকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাদের উদ্ধার করেন। বিকেলে শালিশী বৈঠক করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

প্রমিক হেলাল উদ্দিন(২৮) পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা (হঠাৎপাড়া) গ্রামের সিরাজুল ইসলামে ছেলে। তিনি এক সন্তানের জনক তার প্রেমিকা শাপলা খাতুন(২২) পাবনার চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের করোকোলা গ্রামের সুমন আলীর স্ত্রী। তিনিও এক সন্তানের জননী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হেলাল উদ্দিন ও শাপলা খাতুনের মধ্যে গত প্রায় ৩ বছর ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। তারা বিভিন্ন সময়ে একে অপরের সাথে দেখা করতেন এবং একান্ত সময় কাটাতেন। শুক্রবার রাতে শাপলা খাতুন ফোন করে হেলালকে তার বাড়ি ডেকে আনেন। বিষয়টি স্থানীয় কিছু লোকজন টের পেয়ে যান। তারা শাপলা খাতুনের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে যান। এ সময় তারা দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে উত্তেজিত লোকজন তাদেরকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখেন।

এলাকার লোকজন শনিবার সকালে নিমাইচড়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নুরজাহান বেগম মুক্তিকে বিষয়টি জানান। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান নুরজাহান বেগম মুক্তি গ্রাম পুলিশদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তিনি প্রেমিক যুগলকে উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসেন।

প্রেমিক হেলাল উদ্দিনের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নে। তার লোকজন অষ্টমনিষা ইউপি চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান বকুলকে জানান। নিমাইচড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও অষ্টমনিষা ইউপি চেয়ারম্যান শনিবার বিকেল ৩টায় নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদে শালিসী বৈঠকের আয়োজন করেন। সেখানে প্রেমিক-প্রেমিকা, তাদের স্বজন ও স্থানীয় লোকজন ছিলেন।

সে বৈঠকে উপস্থিত থাকা শাপলা খাতুনের স্বামী সুমন আলী তার স্ত্রীর সাথে আর সংসার করবেন না বলে শালিশী বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে নিমাইচড়া ইউপি চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশদের মাধ্যমে তাকে মির্জাপুর বাজার থেকে আবার শালিসী বৈঠকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। তখন শালিসী বৈঠকের সিদ্ধান্তে জানানো হয়, স্ত্রীকে তালাক দিলে কাবিনের এক লাখ টাকা সুমনকে শোধ করতে হবে। স্বামী সুমন আলী টাকা দিতে না পেরে স্ত্রী শাপলা খাতুনকে সাথে করে বাড়ি চলে যান। অন্যদিকে পরকীয়া প্রেমিক হেলালের বাবার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে হেলালকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে শাপলার স্বামী সুমন আলী বলেন, ‘আমি প্রথমে আমার বউকে নিতে চাইনি। পরে এক প্রকার বাধ্য হয়েই নিতে হয়েছে। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারব না।’

এ বিষয়ে নিমাইচড়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরজাহান বেগম মুক্তি বলেন, পরিষদে বিচার করে হেলালকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

অষ্টমনিষা ইউপি চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান বকুল বলেন, তিনি সালিশী বৈঠকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ছিলেন। পরে কি হয়েছে তিনি জানেন না।’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তবে এ ব্যাপারে থানায় কেউ কোন অভিযোগ করেননি। স্থানীয়ভাবে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।

এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোছাঃ মমতাজ মহল বলেন, তিনি বিষয়টি জেনেছেন। এ বিষয়ে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্থানীয়ভাবে সমস্যাটির সমাধান করেছেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/জিকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত