ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড় করিয়ে ডা. মুরাদকে অভ্যর্থনা

  জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২২, ১১:৫৯

শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড় করিয়ে ডা. মুরাদকে অভ্যর্থনা
ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসানকে অভ্যর্থনা দিতে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী প্রখর রোদে শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে একটি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী, কাউকে অভ্যর্থনা জানাতে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় বা মাঠে দাঁড় করানো নিষেধ।

সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া ইসরাইল আহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

ভিডিওতে দেখা গেছে, মুরাদ হাসান তার ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের গেটে নামেন। এ সময় তার সমর্থকরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। বিদ্যালয়ের ভবন থেকে গেট পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে আগে থেকেই দাঁড়ানো ছাত্রছাত্রীরা হাততালি দিতে থাকে। দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের মাঝখান দিয়ে হেঁটে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান তিনি।

স্থানীয় ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব পরিদর্শন ও জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির আয়োজন করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসান। এদিন বিকেলে ডিজিটাল ল্যাব পরিদর্শন, আলোচনাসভা ও কাঙালিভোজের আয়োজন করা হলেও শিক্ষার্থীদের দুপুরেই হাজির করানো হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী প্রখর রোদে দাঁড় করিয়ে রেখে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে অভ্যর্থনা দেয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, সংসদ সদস্য মুরাদ হাসানকে স্বাগত জানাতে সব ছাত্রছাত্রীই মাঠে দাঁড়িয়ে ছিল। বিদ্যালয় থেকে শিক্ষকরা তাদের উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এ ব্যাপারে পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক জানান, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রউফ বাচ্চু ও সদস্য বাবু শিক্ষার্থীদের লাইনে দাঁড় করিয়েছিলেন বলে শুনেছি। এটি নিয়মবহির্ভূত ও দুঃখজনক।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শেখ মাহমুদ জানান, শোক দিবস উপলক্ষে মতিয়র রহমান তালুকদার বিদ্যালয়ে দুস্থদের জন্য খাবার বিতরণের আয়োজন করে। এমপি মহোদয় বিকেলের দিকে অনুষ্ঠানে আসেন। শিক্ষার্থীদের দুপুর থেকেই উপস্থিত করা হয়।

তবে এটি কোনো অপরাধ নয় বলে দাবি করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুরুজ্জামান। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা এমপিকে ফুল ছিটিয়ে অভ্যর্থনা জানাননি, শুধু মাঠে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রউফ বাচ্চু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঠে লাইনে দাঁড়ানোর জন্য বলা হয়নি। প্রধান অতিথি বিদ্যালয়ে আসার কথা জানতে পেরে তারা দৌড়ে মাঠে লাইনে দাঁড়ায়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, কাউকে অভ্যর্থনা জানাতে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় বা মাঠে দাঁড় করানো আইনগতভাবেই নিষেধ। প্রধান অতিথিকে অভ্যর্থনা জানানোর সঙ্গে শোক দিবসের তাৎপর্যের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

বাংলাদেশ জার্নাল/মনির/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত