তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে: বরিশালের ডিআইজি

বরগুনার ছাত্রলীগের ওপর লাঠিপেটার ঘটনায় নির্ধারিত সময় অর্থাৎ আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর পুলিশ কর্মকর্তা মহরম আলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আখতারুজ্জামান।

বুধবার বিকেল ৩টার দিকে ছাত্রলীগের কর্মীদের ওপর লাঠিপেটার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আখতারুজ্জামান বরগুনায় যান। এরপর আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে বরগুনা সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময়ে সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল বন্ধ করে দেয়া হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

ডিআইজি আখতারুজ্জামান বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি৷ এ বিষয়ে নির্ধারিত সময় অর্থাৎ আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন জমা দেবে তদন্ত কমিটি। পুলিশ কর্মকর্তা মহরম আলীকে চট্টগ্রামে নেয়া হয়েছে। তদন্তের পর তার (মহরম আলী) বিরুদ্ধে স্থানীয় পর্যায়ে পুলিশ সুপার, বিভাগীয় পর্যায়ে আমি (ডিআইজি) ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বরগুনায় পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, একটি ঘটনা দিয়ে পুলিশকে বিচার করা যায় না। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে যেসব পুলিশ সদস্যরা আগ্রাসী ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে বদলি করা হয়েছে।

এ সময় বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আমি আশা করি তদন্ত সাপেক্ষে এই পুলিশ কর্মকর্তা মহরমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আশানুরূপ না হলে মার খাওয়া ছেলেরা অবশ্যই মামলা করবে। আর এটা একজন নাগরিক হিসেবে আইনি অধিকার।

মতবিনিময় সভায় ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সাথে বরগুনা-২ আসনের সাংসদ হাচানুর রহমান রিমন, জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির, পৌর মেয়র কামরুল আহসান মহারাজ, জেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল কবির এ্যাটমসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৫ আগস্ট সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে ফুল দিতে যান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা ও সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরান। এরপর ফেরার পথে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপের সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালান। এতে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আহত হন ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী।

এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার আলোচিত এএসপি মহরম আলীকে প্রত্যাহার করে বরিশাল ডিআইজির কার্যালয়ে নেয়া হয়। সংঘর্ষের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এস এম তারেক রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্য ও দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ।

এছাড়া মহরম আলীর বরখাস্তের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন। পরে পুলিশ কর্মকর্তা মহরম আলীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়।

দীর্ঘ আট বছর পর চলতি বছরের ১৭ জুলাই বরগুনা শহরের সিরাজ উদ্দীন টাউনহল মিলনায়তনে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ জুলাই রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির অনুমোদন দেন। এতে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৩ সদস্যের নাম প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বরগুনা শহরে পদবঞ্চিতরা প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে