ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

‘সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও বিশ্বাস ধার্মিক মানুষের বৈশিষ্ট্য’

  দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২২, ২২:২২

‘সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও বিশ্বাস ধার্মিক মানুষের বৈশিষ্ট্য’
ছবি: প্রতিনিধি

আড়াইশ বছরের পুরানো ঐতিহ্য ও দিনাজপুরের রাজ পরিবারের প্রথা অনুযায়ী ঐতিহাসিক কান্তনগর মন্দির থেকে কান্তজীউ বিগ্রহ নৌপথে রাজবাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। রাত সাড়ে ১০টায় রাজবাড়িতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঐতিহ্যবাহী কান্তনগর মন্দির থেকে পূজা-অর্চনা শেষে শ্রী শ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ পুনর্ভবা নদীর কান্তনগর ঘাটে আনা হয়।

সেখানে দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল উপস্থিত থেকে শ্রী শ্রী কান্তজীউ যুগল বিগ্রহ’র নৌবহর যাত্রার বিদায় জানান। সনাতন ধর্মালম্বীদের ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আরেক রূপ কান্তজীউ বিগ্রহ নিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে পুনর্ভবা নদীর দুই তীরে ভক্ত-পূণ্যার্থীদের ভিড় উৎসবের আমেজে পরিণত হয়।

শ্রী শ্রী কান্তজীউ যুগল বিগ্রহ’র নৌবহরকে বিদায় জানানোর পর সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল সাংবাদিকদের বলেন, সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও বিশ্বাস ধার্মিক মানুষের বৈশিষ্ট্য। অসাম্প্রদায়িক চেতনার কারণেই এ দেশে সম্মিলিতভাবে প্রত্যেকটি সম্প্রদায় ও ধর্মের মানুষ অবস্থান করছে। যারা ধর্মকে ধারণ করে না, তারাই উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীতে পরিণত হয়। ধর্মান্ধতা সমাজের ঐতিহ্যকে নষ্ট করে দেয়। তাই আমরা ধর্মীয় অনুভূতিকে ধারণ করবো আর সাম্প্রদায়িকতাকে বর্জন করবো।

তিনি আরও বলেন, কান্তজীউ মন্দির থেকে কান্তজীউ বিগ্রহের বিদায় মুহূর্তে লক্ষ মানুষের সমাগম ও মিলনমেলায় কেবলমাত্র হিন্দুরাই সমবেত ছিলেন না; সকল ধর্মের মানুষদের সমন্বিত শ্রদ্ধা-ভক্তি-বিশ্বাসে কান্তজীউ বিগ্রহ তিন মাসের জন্য দিনাজপুরের রাজবাড়িতে গেলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজ দেবত্তর স্টেট'র এজেন্ট রণজিৎ কুমার সিংহ, কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরুল হাসান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি সুনীল চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক রতন সিংহ, ডা. ডি সি রায় প্রমুখ।

উল্লেখ্য, দিনাজপুরের রাজবংশের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৫০০ বছর আগে। সেই বংশের রাজা প্রাণনাথ ১৭২২ সালে দিনাজপুর শহর থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে কাহারোল উপজেলার কান্তনগর এলাকায় কান্তজীউ মন্দির নির্মাণকাজ শুরু করেন। ১৭৫২ সালে এই মন্দিরের কাজ শেষ করেন তার পোষ্যপুত্র রামনাথ। সেই সময় থেকেই কান্তজিউ বিগ্রহ নয় মাস কান্তনগর মন্দিরে এবং তিন মাস দিনাজপুর শহরের রাজবাড়িতে রাখা হয়। জন্মাষ্টমীর একদিন আগে কান্তজীউ বিগ্রহ ধর্মীয় উৎসব-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে দিনাজপুরের রাজবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

কান্তনগর মন্দির থেকে দীর্ঘ প্রায় ২৫ কিলোমিটার নদীপথে কান্তনগর ঘাট থেকে দিনাজপুর শহরের সাধুরঘাট পর্যন্ত শতাধিক ঘাটে কান্তজীউ বিগ্রহ বহনকারী নৌকা ভেড়ানো হয়। নৌকাযোগে দিনাজপুর আসার সময় হিন্দু ধর্মালম্বী হাজার হাজার ভক্ত নদীর দুই কূলে কান্তজীউ বিগ্রহকে দর্শন এবং বাড়ির বিভিন্ন ফল, দুধ ও অন্যান্য শাকসবজি উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে আসেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত