ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

জাবির নির্মিতব্য গ্রন্থাগার: ‘বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা মিলবে’

  জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৫৩

জাবির নির্মিতব্য গ্রন্থাগার: ‘বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা মিলবে’
ছবি- প্রতিনিধি

প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল আসন, পড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকা ও দক্ষ জনবলের অভাবে জর্জরিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এই সেবাখাতের আধুনিকায়নে শিক্ষার্থীদের দাবি দীর্ঘদিনের। তবে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে নতুন গ্রন্থাগারের। বিষয়টি বাংলাদেশ জার্নালকে নিশ্চিত করেছেন জাবির অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন।

প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার আহসান হাবীব এই প্রতিবেদককে জানান, ২ লাখ ৫০ হাজার স্কয়ার ফিট আয়তনের ছয়তলা এই গ্রন্থাগার ভবনে থাকবে বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধা যেখানে ৭-৮ হাজার শিক্ষার্থী একই সময় গন্থাগারের সেবা নিতে পারবেন।

এ সময় তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপ্তি বড় হচ্ছে। তা মাথায় রেখেই অন্তত ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে সেবা দেয়ার উপযোগী করে নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন গ্রন্থাগার।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী কোর্সগুলোর পাঠ্যপুস্তক ও রেফারেন্স বই ছাড়াও গবেষণা জার্নাল ও গবেষণার জন্য রেফারেন্স বই, শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক বই এবং শিল্প, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের তিন লক্ষ ভল্যুম পুস্তকের সংগ্রহশালা হবে নির্মিতব্য গ্রন্থাগার। শারীরিক প্রতিবন্ধী ও শিশুদের জন্য স্বতন্ত্র বিভাগে প্রকাশনার বিশেষ সংগ্রহও থাকবে।

রিডিং জোনে সাধারণ পাঠকক্ষের পাশাপাশি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য থাকবে আলাদা পাঠকক্ষ। রেফারেন্স রিডিং, ওপেন গ্রুপ স্টাডি, গ্রুপ ডিসকাশন ও রিসার্চ কনসাল্টেশনের জন্য থাকবে পৃথক পৃথক পাঠকক্ষ।

টেক জোনে ইলেট্রনিক ওয়ার্কস্টেশনসহ ই-লাইব্রেরিতে মিলবে আন্তর্জাতিক লাইব্রেরি চ্যানেলের সাথে যুক্ত হওয়ার সুবিধা। বিশ্বের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা সংস্থা ও প্রকাশকের ডেটাবেইসে যুক্ত হয়ে বিরল বা দুষ্প্রাপ্য প্রকাশনার ডিজিটাল সংস্করণ পড়তে পারবেন শিক্ষার্থীরা। থাকবে এন্ডনোট (Endnote), জোটেরো’র (Zotero) মতো আধুনিক শিক্ষার্থী-সহায়ক সফটওয়ার ব্যবহারের সুযোগ।

এছাড়াও সেন্ট্রাল ক্যাটালগ ও ডেটাবেজ সেন্টার, উচ্চমানের অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং স্টুডিও ও রেফারেন্স সেকশন, অডিও-ভিজ্যুয়াল কিওস্ক, আর্টিফিসিয়াল ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারের জন্য স্টুডিও এবং ডিজিটাল ম্যাপিং ও জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম অধ্যয়নের জন্য ভূ-স্থানিক লাইব্রেরি থাকবে।

আর স্পেশাল জোনে থাকবে অফিস রেকর্ড ও আর্কাইভ সংরক্ষণের জন্য পৃথক ব্যবস্থাপনা। থাকবে সংগ্রহশালা, আর্ট গ্যালারি এবং এক্সিবিশন হল।

লোকপ্রশাসন বিভাগের (৪৯তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ওয়াজহাতুল ইসলাম বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, "আমরা চাই, দ্রুততম সময়ে গ্রন্থাগারের নির্মাণকাজ শেষ করা হোক। বিদ্যমান লাইব্রেরির অব্যবস্থাপনা ও পড়ার পরিবেশের অভাবে আমাদের শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ বর্তমানে অনেকটাই সংকুচিত। আশা করি, নির্মিতব্য গ্রন্থাগার আমাদের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেবে।"

প্রসঙ্গত, এর আগে চলতি বছরের ১০ মার্চ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির একটি ভার্চুয়াল সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ছয়তলা বিশিষ্ট এই গ্রন্থাগার নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১০১ কোটি ৮৫ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৬ টাকা। বেসিন পাওয়ার লিমিটেড (এমবিপিএল) এবং অ্যাডভান্স টেকনোলজি কনসোর্টিয়াম লিমিটেড (এটিসিএল) যৌথভাবে এ কাজটি করবে।

জাবির অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, দ্রুততম সময়ের ভেতর বিকল্প জায়গায় লাইব্রেরি স্থানান্তর করার পর পুরাতন লাইব্রেরি ভবন ভাঙা হবে এবং নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হবে। এর আগে কিছু প্রাথমিক কাজ করা প্রয়োজন, তবে সেগুলো রাত থেকে ভোর পর্যন্ত চলবে; গ্রন্থাগারে পড়ার সময়টাতে কোনো কাজ চলবে না।

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘অক্টোবরের ভেতর নির্মাণাধীন ছাত্রী হলের কাজ শেষ হবে অনুমান করা হচ্ছে। হল বুঝে পেলেই ফজিলাতুন্নেসা হলের শিক্ষার্থীদের নতুন হলে স্থানান্তরের পর সেখানে লাইব্রেরি স্থানান্তর করা হবে, এখন পর্যন্ত এমনটাই সিদ্ধান্ত।’

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত