চট্টগ্রামে যুবলীগ কর্মী হত্যা: প্রধান আসামিসহ তিনজন গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২:১৮
চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জে যুবলীগের কর্মী মো. শহিদুল ইসলাম আকাশ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মামুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শনিবার রাতে ও রোববার সকালে চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী ও চাঁদপুর জেলা শহরের পুরান বাজার এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মূল আসামি মো. মামুন (২৫) এবং তার দুই সহযোগী মুকেশ চন্দ্র দাস ওরফে সৌরভ দাস (২৪) ও মো. ইকবাল (২২)।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ এলাকায় ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মামুনের ছোট ভাই আফজাল হোসেনকে দুস্কৃতিকারীরা কুপিয়ে হত্যা করে। ওই সময়ে মামুন এবং তার অপর এক ভাই ইকবাল নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলায় জেল হাজতে ছিল। তাদের মধ্যে পূর্ব থেকে পারিবারিক ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব লেগেই থাকতো। পরে চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পায় মামুন। মুক্তি পেয়ে মামুন তার ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তার সহযোগী মোতালেব, রাজু, নেজাম, হামিদ ও মুকেশসহ পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, জামিনে মুক্তি পাওয়ার ৫ দিনের মাথায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর যুবলীগ কর্মী মো. শহিদুল ইসলাম আকাশকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে আসামিরা। শহিদুল এবং তার বাবা প্রতিদিনের মতো তাদের ফার্নিচারের দোকানে যায়। ওইদিন সন্ধ্যায় মো. মামুন এবং তার সহযোগীরা বিভিন্ন অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দোকানে গিয়ে শহিদুল ইসলামকে গালাগাল করতে থাকে। এক পর্যায়ে শহিদুল ইসলাম এর প্রতিবাদ জানালে আসামি মো. মামুন তাকে টেনে দোকানের বাইরে নিয়ে যায় এবং কিরিচ দিয়ে মাথার পিছনে গভীর জখম করে আহত করে।
এম এ ইউসুফ বলেন, আঘাতের সঙ্গে সঙ্গে শহিদুল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামি মো. মোতালেব তার হাতে থাকা ধামা দিয়ে শহিদুলকে গলায় এবং থুতনীতে গুরুতর জখম করে। এক পর্যায়ে শহিদুলের বাবা তার ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে আসামি মামুন তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং দোকানের সামনে রাস্তায় ফেলে তার বুকের ওপর বসে হুমকি দেয়, যদি সে বেশি নড়াচড়া করে তবে তাকেও জবাই করে দেবে। এরপর আসামিরা তাদের হাতে থাকা ছুরি, কিরিচ এবং বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে শহিদুলকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে গুরুতর জখম করে। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজনকে এগিয়ে আসতে দেখে আসামিরা গুরুতর আহত অবস্থায় শহিদুলকে ফেলে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, শহিদুল ইসলাম ওরফে আকাশকে হত্যার পরপরই আসামিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে গা ঢাকা দেয়। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে মূল আসামি মো. মামুন ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় চিনকির বাজার এলাকায় কুপিয়ে জখম করা হয় শহিদুল ইসলাম আকাশকে। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন। ওইদিন রাত সোয়া ৯টার দিকে হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারে আনা হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে
