বিত্তবানরাও মাদক ব্যবসায় জড়াচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:৩৮ আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:৫৭
মাদকের চাহিদা হ্রাস করতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মাদকের কুফল সম্পর্কে সচেতন হতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, মাদক কারবারের সঙ্গে সাংবাদিক, পুলিশ ও বিত্তবানরাও জড়িত। যারা এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত হন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়।
তিনি বলেন, আমরা ২০৪১ সালের যে স্বপ্ন দেখছি, এই যে আমাদের উন্নয়ন, তার সব বরবাদ হয়ে যাবে যদি মাদকের ভয়াবহতা থেকে আমাদের ভব্যিষৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে না পারি।
সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত 'মাদকাসক্তি নিরাময়ে বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারটির আয়োজন করে সেন্টার ফর গভার্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের সন্তানেরা অত্যন্ত মেধাবী। সেই প্রজন্মকে যদি মাদকাসক্তি থেকে রক্ষা করতে না পারি তাহলে আমাদের স্বপ্ন অবাস্তবই থেকে যাবে। মাদকের চাহিদা কমাতে হলে মিডিয়ার অনেকখানি গুরুত্ব রয়েছে।
মাদক মামলা বিচারের ক্ষেত্রে সাক্ষী পাওয়া যায় না বলে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারাগারগুলোতে বন্দিদের ৬০ শতাংশই মাদক মামলার। লম্বা জট লেগেছে মামলার। আর এ কারণে মাদক মামলা হারিয়ে যায়।
তিনি বলেন, মাদক মামলার বিচারে আমরা চেয়েছিলাম বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। আমরা সেটা এখনো পাইনি। যদি শাস্তিটা দৃশ্যমান হতো তাহলে মাদকের ডিমান্ড হ্রাস ও সাপ্লাই কমে যেত।
দেশের কারাগারগুলোতে বন্দি ধারণক্ষমতা ৪১ হাজারের কিছু বেশি উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবসময় থাকেই ৮০ থেকে লাখের বেশি। এর মধ্যে ৬০ শতাংশই মাদক ব্যবসায়ী। মাদক সরবরাহে সমাজের কতিপয় পেশাজীবীও জড়িত হয়ে পড়ছে। এর মধ্যে আছেন সাংবাদিক, পুলিশ ও বিত্তবানরা। আমরা সবাইকে আইনের আওতায় আনছি। কেউ বাদ যাচ্ছে না।
ডোপ টেস্টের প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশে যারা মাদক নেয় তদেরকে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলে তাকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। এই জায়গাটাতে আমরা খুব কঠিন অবস্থানে চলে আসছি।
চাকরির শুরুতে যারা সিলেক্টেড হবে তাদেরকে ডোপ টেস্ট করার প্রচলন পুরোপুরি নিতে যাচ্ছি। পুলিশ-বিজিবি সব জায়গায় ডোপ টেস্টের প্রচলন রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাদকাসক্ত হচ্ছে কি না প্রয়োজনে আমরা ডোপ টেস্ট করবো।
মাদকের চাহিদা কমাতে টিভিসি তৈরি হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা মাদকের চাহিদা হ্রাসে শুধু ক্রোড়পত্র দেই না, ছোট ছোট টিভিসিও বানাচ্ছি। প্রত্যেকটি জেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি। ল্যাবও হয়েছে।
মাদকের সাপ্লাই কমাতে বিজিবি, কোস্ট গার্ডের সক্ষমতা ও জনবল বৃদ্ধি করা হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্ডারে আমরা এখন অনেক কিছু করছি। টেকনাফে নাফ নদীর যে বর্ডার তা দুর্গম। সেখানে বিওপি থেকে বিওপি যেতে সময় লাগে। আমরা সেন্সর লাগাচ্ছি সমস্ত বর্ডারে। হেলিকপ্টার টহলের ব্যবস্থা করছি, যাতে মাদকের সাপ্লাই বন্ধ করা সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন