ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

তরুণীর নগ্ন ছবি হাতিয়ে প্রতারণা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:৫২

তরুণীর নগ্ন ছবি হাতিয়ে প্রতারণা
রামকৃষ্ণ দেবনাথ প্রকাশ ইমন। ছবি: নিজস্ব

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সাথে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ দাবির অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতের নাম- রামকৃষ্ণ দেবনাথ প্রকাশ ইমন (৩৮)।

মঙ্গলবার কুমিল্লা জেলার বরুড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ইমন বরুড়া উপজেলার ভাকসার গ্রামের মনোরঞ্জন দেবনাথের ছেলে।

ইমন ফেসবুকে বিভিন্ন আইডির মাধ্যমে বিভিন্ন তরুণীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। এরপর তাদের নগ্ন ছবি হাতিয়ে টাকা দাবি করতেন, না দিলে এসব ছবি ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিতেন।

ডিএমপি’র উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ মোহসীন বলেন, ফেসবুকে ‘মন আমার উড়ন্ত পাখি’ নামে একটি ফেসবুক আইডির মাধ্যমে রাজধানীর একটি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে ইমন। পরিচয় থেকে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের জেরে কৌশলে মেয়ের গোসলের ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নেন। এরপর সেই ছবি ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়ের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে ইমন। টাকা না দিলে ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেন তিনি। পরে ওই শিক্ষার্থী থানায় অভিযোগ করলে ইমনকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ছেলেদের জন্য ফারজানা আক্তার, মেয়েদের জন্য মন আমার উড়ন্ত পাখি

গ্রেপ্তার ইমন বেশ কয়েকটি ফেসবুক আইডি ব্যবহার করেন। তবে কোনো আইডি দিয়ে প্রতারণা শেষ হলে সেই আইডি বন্ধ করে দেন। সর্বশেষ তার পাঁচটি আইডি সচল হিসেবে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছেন ওসি মোহসীন। সেগুলো হল- মন আমার উড়ন্ত পাখি, মেঘলা আক্তার, ফারজানা আক্তার, ঢাকাইয়া পোলা, হঠাৎ বৃষ্টি। এগুলোর মধ্যে মন আমার উড়ন্ত পাখি আইডি দিয়ে মেয়েদের সাথে এবং ফারজানা আক্তার দিয়ে ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব করেন। ছেলেদের সাথে ফেসবুকে বন্ধুত্ব করেন এই মেয়ের আইডি দিয়েই। ছেলেরা ফারজানা মনে করে এই ইমনের সাথেই চ্যাট করতেন।

নিজেকে দুই গার্মেন্টসের মালিক পরিচয় দিতেন ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী ইমন

ওসি জানান, ইমন কুমিল্লায় ছোট একটি দোকান করেন। ওই দোকানে মূলত মোবাইলের রিচার্জ কার্ড বিক্রি করা হয় এবং রিচার্জ করা হয়। কিন্তু ইমন মেয়েদের কাছে নিজের পরিচয় দেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী হিসেবে। নারায়নগঞ্জে তার দুইটি গার্মেন্টস কারখানা আছে বলেও দাবি করেন তিনি।

ব্যবসার তথ্যই ইমনের প্রতারণার হাতিয়ার

ইমন মোবাইল রিচার্জের দোকানদার। প্রতারণার মূল উৎস তার ব্যবসা থেকেই প্রাপ্ত তথ্য। তার কাছে যেসব মেয়ে রিচার্জ করতে যেতেন, তিনি সেসব নাম্বার নোট করে রাখতেন। পরে সেসব নাম্বারে যোগাযোগ করে প্রেমের ফাঁদে ফেলতেন। এরপর ফুসলিয়ে তাদের কাছ নগ্ন, আপত্তিকর ছবি সংগ্রহ করতেন। যারা ছবি দিতেন, তারাই তার জালে আটকা পড়তেন। এরপরই ইমন টাকা দাবি করতেন। নতুবা এসব ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি আরও জানান, ইমনকে প্রতারণার শিকার তরুণীর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার আদালতে পাঠানো হবে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত