‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় জুলুস’র স্বীকৃতি পেতে গিনেসে আবেদন
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২২, ১৯:৫২
চট্টগ্রামে প্রতিবছর ১২ রবিউল আউয়াল-এ আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় জুলুস পালন করা হয়। এ বছরও আগামী রোববার (৯ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে জুলুস শুরু হবে। এটি হবে চট্টগ্রামের ৫০তম জুলুস। আর এই জশনে জুলুসকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জুলুস হিসেবে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলতে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে আয়োজনকারী সংস্থা আনজুমান-এর রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট।
শুক্রবার সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্মদিন তথা ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে পৃথিবীতে যত জুলুস আয়োজিত হয়, তার মধ্যে চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে আয়োজিত হওয়া জুলুসটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় জুলুস। আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ৯ অক্টোবর জুলুস পর্যবেক্ষণ করবে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ম্যানেজমেন্ট টিম।
তিনি বলেন, এবারের জুলুসে নেতৃত্ব দেবেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ্। ভক্তরা উনাকে দেখতে আসবেন। একইসঙ্গে জুলুসে আরও অংশ নেবেন আল্লামা পীর সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ ও আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ। তিন হুজুরের কারণে এবার জুলুসে অন্তত অর্ধকোটি মানুষের অংশগ্রহণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, জুলুসের অর্ধশতবর্ষকে ঘিরে নেয়া হয়েছে বাড়তি আয়োজন। গত এক মাস আগে থেকেই জুলুস সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য আনজুমানের নিজস্ব সিকিউরিটি ফোর্স ও গাউসিয়া কমিটির অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে।
এদিকে জুলুসকে ঘিরে গত এক মাস আগে থেকেই চলছে নানা প্রস্তুতি। আয়োজকদের মতে, এবারের জশনে জুলুসে অর্ধকোটি মানুষের সমাগম ঘটবে। চট্টগ্রামের এই জুলুস হবে ৫০তম। জুলুসের অর্ধশত বর্ষকে ঘিরে নেয়া হয়েছে বাড়তি আয়োজন। পুরো নগরীতে এবার সাজ সাজ রব।
আয়োজক কমিটি সূত্র জানায়, আনজুমান ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় এই জুলুস ৯ অক্টোবর সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ-এ কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে শুরু হবে। জুলুসে নেতৃত্ব দেবেন পাকিস্তান থেকে আগত আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ্। অংশগ্রহণ করবেন আল্লামা পরী সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ ও আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ।
আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, জুলুস শুরুর পর বিবির হাট থেকে মুরাদপুর হয়ে মির্জারপুল, কাতালগঞ্জ হয়ে অলিখাঁ মসজিদ চকবাজার, কেয়ারি মোড়, প্যারেড ময়দানের পশ্চিম পাশ হয়ে চট্টগ্রাম কলেজ, গণি বেকারী (ডানে মোড়), খাস্তগীর স্কুল (ডানে মোড়), শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ রোড হয়েআসকার দিঘী, কাজীর দেউরী (বামে মোড়), আলমাস (বামে মোড়), ওয়াসা (ডানে মোড়), জিইসি, দুই নম্বর গেট, পুনরায় মুরাদপুর (ডানে মোড়) বিবিরহাট, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে দুপুর ১২টায় মাহফিল হবে। একই ময়দানে যোহরের নামাজ এবং নামাজ শেষে দোয়া ও আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালে (১৩৯৫ হিজরি) থেকে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (র.) নির্দেশনা ও রূপরেখা অনুসারে দেশে সর্বপ্রথম জশনে জুলুস আত্মপ্রকাশ করে। সর্বপ্রথম জুলুস চট্টগ্রামের কোরবানিগঞ্জ বলুয়ারদীঘি পাড়ের খানকাহ এ কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে শুরু হয়।
আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় দেশের প্রথম জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দেন আনজুমান ট্রাস্টের তৎকালীন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ আল কাদেরী। আর ১৯৭৬ সালে হুজুরকেবলা তৈয়্যব শাহ (র.) বাংলাদেশে সফরে আসেন। এরপর তিনি নিজেই জুলুসে নেতৃত্ব দেন, যা ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তিনি প্রতিবছর ৯ রবিউল আউয়াল ঢাকা এবং ১২ রবিউল আউয়াল চট্টগ্রামে আয়োজিত জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে