ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: কর্ণফুলী নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২২, ০২:১১

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: কর্ণফুলী নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি
কর্ণফুলী নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি । ছবি : প্রতিনিধি

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চট্টগ্রামে তীব্র বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং ঝড়ো হাওয়া বইছে। এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের মাঝামাঝি এলাকায় উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। এর প্রভাবে কর্ণফুলী নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থা করছে। আর নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে অধিদপ্তরের ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত এবং উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সোমবার মধ্যরাত বা মঙ্গলবার ভোররাত নাগাদ ভোলার কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সেইসঙ্গে এসব এলাকায় ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৮ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বরিশাল বিমানবন্দর বন্ধ

চট্টগ্রাম পানি বিজ্ঞান উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মনজুরুল হক বলেন, কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট পানি পরিমাপ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী সোমবার রাত ১২টার দিকে পরিমাণ ছিল ৪ মিটার। যেখানে বিপদ সীমা হল ৪ দশমিক ৬০ মিটার। রাত ১টা পর্যন্ত জোয়ার আছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে প্রচণ্ড বাতাস ও পানি উচ্চতা বাড়ায় চট্টগ্রামের বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী উপজেলাগুলোর আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৫১১টি আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও ১ হাজার ১৪০টি বিদ্যালয় ও ৯টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে ইতোমধ্যে ২০ হাজার উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে বাঁশখালীর আশ্রয় কেন্দ্র ৩ হাজার, আনোয়ারায় ২ হাজার, সন্দ্বীপে ৭ হাজার, সীতাকুণ্ডে ৩ হাজার, মীরসরাইয়ে ২ হাজার ৫০০, সিটি করপোরেশন এলাকার পতেঙ্গা ও কাট্টলী মৎস্যজীবী পল্লীতে ২ হাজার ৫০০ জন আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২৯০টি মেডিকেল টিম। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে ২৯০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলার ২০০টি ইউনিয়নে একটি করে মেডিকেল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। এর বাইরে ১৫টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিটিতে পাঁচটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ৯টি আরবান ডিসপেনসারীতে একটি করে ৯টি মেডিকেল টিম, স্কুল হেলথ্ ক্লিনিকে একটি এবং ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঁচটি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যে কোন বিপর্যয়ে এসব মেডিকেল টিম সেবা প্রদান করবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/মনির

  • সর্বশেষ
  • পঠিত