ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

পরিবহন সমিতির সদস্য কার্ড বানাতে প্রতিবন্ধীকে খুন

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১৮:৪৯

পরিবহন সমিতির সদস্য কার্ড বানাতে প্রতিবন্ধীকে খুন
গ্রেপ্তার হওয়া আসামি। ছবি: প্রতিনিধি

সাড়ে ৭ হাজার টাকা। আরাকান সড়ক পরিবহন সমিতির সদস্য কার্ড বানাতে প্রয়োজন সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এই টাকার জন্য খুন হয়েছে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। এই হত্যা মামলায় জড়িত ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে একটি অটোরিকশা ও মোবাইল ফোন।

রোববার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা এসব তথ্য জানান। এর আগে শনিবার রাতে নগরের কোতোয়ালী থানাধীন লালদীঘির পাড়ের গণশৌচাগারের পাশ থেকে আসামি মো. আলাউদ্দিন (২৮), কোতোয়ালীর হোটেল আল-আমিন থেকে মো. শাকিল আহমদকে (১৯) গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত ৯ নভেম্বর শিকলবাহা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ডোবার পানিতে এক ব্যক্তির মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। পরে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গলায় কাপড়ের বেল্ট পেঁচিয়ে ফাঁস লাগানো এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ওই সময় প্রাথমিকভাবে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। পরে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কর্ণফুলী থানায় মামলা দায়ের হয়।

মামলার পর পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তদন্তে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তির শরীরের ডান হাত ছিল না বলে জানতে পারে পিবিআই। তিনি ছিলেন একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। এরপর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নিহত ব্যক্তি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক। তার নাম মো. হাসান (৪৫)। তিনি নোয়াখালীর চরজর থানার সিদ্দিক আহমদের ছেলে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই নিহত হাসানের ব্যবহৃত ফোনের সূত্র ধরে ও প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি মো. আলাউদ্দিনকে লালদীঘির পাড় থেকে ও মো. শাকিল আহমদকে কোতোয়ালীর হোটেল আল-আমিন থেকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও অটোরিকশাটি উদ্ধার করে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী হত্যা মামলায় ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।

তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, ঘটনার ২০/২৫ দিন আগে তাদের পরিচয় হয়। তারা উভয়ে লালদীঘির পাড়ে গাড়ির ওয়াশের কাজ করতো। এদের মধ্যে আলাউদ্দীন লালদীঘির পাড়ে একটি মসজিদের পাশের পাবলিক টয়লেটে চৌকিতে রাত্রিযাপন করতো। আর শাকিল একটি বোর্ডিংয়ে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতো। এর মধ্যে আলাউদ্দীনের আরাকান সড়ক পরিবহন সমিতির সদস্য কার্ড বানাতে সাড়ে ৭ হাজার টাকা প্রয়োজন হয়। এজন্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৮ নভেম্বর দিবাগত রাত দেড়টায় সিনেমা প্যালেসের সামনে থেকে হাসানের অটোরিকশাটি শিকলবাহা যাওয়ার জন্য ভাড়া করে। শিকলবাহা কলেজ বাজার আদর্শ পাড়া বড় মাঝির বাড়ির সামনে রাস্তায় পৌঁছলে ভাড়া দিয়ে তারা অটোরিকশাটি জোর করে রেখে দিতে চায়। এ সময় চালক হাসান তার গাড়িতে থাকা একটি কাঠ দিয়ে তাদের আঘাত করে। তখন আসামি শাকিল তার হাত থেকে কাঠটি কেড়ে নিয়ে হাসানকে আঘাত করে। এক পর্যায়ে শাকিল ক্ষিপ্ত হয়ে বেল্ট দিয়ে হাসানের গলা পেঁচিয়ে টান দেয়। সাথে সাথে আলাউদ্দীন তার দুই পা চেপে ধরে এবং শাকিল বেল দিয়ে হাসানকে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। এরপর তারা হাসানের মরদেহকে রাস্তার পাশে ডোবাতে ঝোঁপের মধ্যে লুকিয়ে রেখে তার মোবাইল ও অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত