ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

হবিগঞ্জে হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীর চাপ

শয্যাসংকটে মেঝেতে চিকিৎসা

  হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২২, ১৩:৩০

হবিগঞ্জে হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীর চাপ
শয্যা না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ছবি: প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে দিন দিন বাড়ছে শিশু রোগীর চাপ। এর মধ্যে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যাই বেশি। জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, শাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রতিদিনই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন রোগীরা।

আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট। ফলে হাসপাতেলের মেঝে ও বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেককে।

এদিকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পেতে গিয়ে নানা দুর্ভোগের অভিযোগ রোগী ও তাদের স্বজনদের। শয্যা সংকট ছাড়াও সঠিক চিকিৎসা না পাওয়া ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশসহ নানা অভিযোগ উঠে এসেছে তাদের কথায়।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় থেকে জানা যায়, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে শিশু ওয়ার্ডে শয্যাসংখ্যা মাত্র ৭০টি। অথচ প্রতিদিন সেখানে রোগী ভর্তি হচ্ছে বরাদ্দ সিটের দ্বিগুণ; কখনো বা তিনগুণ।

সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালে ভর্তি শিশুরা প্রায় সবাই ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের রোগী। যাদের বেশিরভাগই আবার হাওড় ও প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা। হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে অনেক শিশু রোগীকে মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এ ছাড়া হাসপাতালের মেঝে ও বিছানাগুলোও ছিল অপরিচ্ছন্ন। যেখানে-সেখানে পড়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা, থুতু, পানের পিক। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে নোংরা পরিবেশের কারণে উল্টো আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে তাদের শিশুরা।

হবিগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা তানিশা আক্তার তার নিজের ১১ মাসের শিশুকে নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে। তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, ২ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কিন্তু সময়মতো চিকিৎসক বা নার্স কেউই শিশুটিকে দেখতে আসেন না। কোনো প্রয়োজনে নার্সদের ডাকলে তারা দুর্ব্যবহার করেন।

শিশুসন্তানের চিকিৎসার জন্য আসা ইয়াছিন নামে এক পিতা বলেন, শিশু ওয়ার্ডের চারপাশ নোংরা হয়ে আছে, সিটগুলোতে চাদর নেই, দাগ আর ময়লা হয়ে আছে হাসপাতালের মেঝে। এখানে শিশুদের যে পরিবেশে চিকিৎসা দেয়া হয়, তাতে শিশুরা আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।

আরেক দুই বছরের মেয়েকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে চিকিৎসা করাতে আসা আব্দুল লতিফ জানান, নার্স ইনজেকশন দিয়ে বলেন লাইনে দাঁড়িয়ে নেবুলাইজার দেয়ার জন্য। নেবুলাইজারের কাছে গিয়ে দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। মাত্র একটি নেবুলাইজার মেশিন অথচ শিশু শত শত। তাই বাধ্য হয়েই নেবুলাইজার কিনে বাড়িতে গেছেন।

এ সব বিষয়ে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মুমিন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যাসংখ্যা ৭০টি। কিন্তু আমাদের এখানে প্রতিদিন শতাধিক কোনো কোনো দিন তিন শতাধিক রোগীও ভর্তি হচ্ছে। ফলে অনেক রোগীকেই মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হয়। এ ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত