ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

ডিসেম্বর এলেই লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন মুনতাজ

  গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৩৩  
আপডেট :
 ১৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৩৫

ডিসেম্বর এলেই লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন মুনতাজ
পতাকা ফেরি করছেন মুনতাজ। ছবি: প্রতিনিধি

এক দিন পরেই উদযাপিত হবে বাঙালি জাতির মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর। সেই অপেক্ষায় পুরো দেশবাসী। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে পতাকার ব্যবহার বেড়ে যায়। এই সময় পথে-ঘাটে পাওয়া যায় ভ্রাম্যমাণ পতাকা বিক্রেতাদের। বিজয়ের মাস এলেই লাল-সবুজ ফেরিওয়ালাদের পতাকা বিক্রির ধুম পড়ে।

মহান মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থেকেই সারা ডিসেম্বরে জাতীয় পতাকা বিক্রি করেন মুনতাজ উদ্দিন। নতুন প্রজন্মের হাতে পতাকা তুলে দিতেই গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সর্বত্রই ফেরি করে তিনি বিক্রি করেন পতাকা। তিনি শুধু ডিসেম্বর মাসেই নয় ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসেও জাতীয় পতাকা বিক্রি করে থাকেন।

বুধবার সকালে কালিয়াকৈরে শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে কথা হয় পতাকার ফেরিওয়ালা মুনতাজ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি থেকে পতাকার ফেরিওয়ালা হয়েছি। শুধু ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যেই পতাকা বিক্রি করি না।’

পতাকার ফেরিওয়ালা মুনতাজ উদ্দিন হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা থেকে এসেছেন। তিনি গাজীপুর চৌরাস্তায় ভাড়ায় থেকে গাজীপুর, টাঙ্গাইলসহ সাভারের বিভিন্ন এলাকায় পথে-প্রান্তরে পতাকা বিক্রি করেন। সরু বাঁশে ছোট-বড় পতাকা বেঁধে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর জাতীয় পতাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন দেশের নানা প্রান্তে। সারা দিন হেঁটে জেলা-উপজেলা শহরে পতাকা বিক্রি করেন তিনি। পতাকা তুলে দেন স্বাধীন দেশের নতুন প্রজন্মের হাতে।

ফেরিওয়ালা মুনতাজ উদ্দিন বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে আমি পতাকা নিয়ে বের হই। এ মাসে পতাকা বিক্রি করতে বেশ ভালো লাগে, প্রায় সব ধরনের মানুষ এ মাসে পতাকা কেনে। শুধু টাকার জন্যই যে পতাকা বিক্রি করি, তা নয়। দেশের প্রতি ভালোবাসা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সৈনিকদের শ্রদ্ধা জানাতেই ৭ বছর ধরে লাল-সবুজের পতাকা বিক্রি করি।

শুধু পতাকা নয়, লাল-সবুজের ব্যান্ডেনা, ব্রেসলেট, কাগজের বিজয় দিবস লেখা টুপি বিক্রি করছেন তিনি। ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও ডিসেম্বর মাস এলেই পতাকা হাতে বেরিয়ে পড়েন নগরীর পথে-প্রান্তরে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ঘুরে পতাকা বিক্রি করেন। সকাল ৯ টা-বিকাল ৩ টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বেশি বিক্রি করেন, তারপর বাকী সময় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বিক্রি করেন। তার কাছে বড় আকারের পতাকার দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। মাঝারি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা, ছোট আকারের পতাকার দাম ১০ থেকে ৫০ টাকা। মাথায় বাঁধার জন্য ফিতাযুক্ত পতাকার দাম ১৫ টাকা, আর রাবারের ফিতা ২০, লাঠিতে বাঁধায় জন্য পতাকার দাম ১০ টাকা। প্রতিদিন গড়ে তিনি ২০০০ থেকে ৩০০০ হাজার টাকার পতাকা বিক্রি করেন। বিজয় দিবস যত কাছে আসে, বিক্রি ততই বাড়ে। বিজয় দিবসে পতাকা বিক্রি করে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ হয় বলে তিনি জানান।

ক্রেতা শুভ সারোয়ার জানান বলেন, ২০ টাকা দিয়ে দুইটা পতাকা কিনেছি। বিজয়ের মাস চলছে, তাই দেশের পতাকা বাইকে টানিয়ে রাখব।

শাহীন স্কুলের অভিভাবক সালমা আক্তার শান্তা জানান, ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে বাচ্চাদের জন্য কয়েকটি জাতীয় পতাকা ও ফিতা কিনেছেন। এখন থেকেই যেন ছোট বাচ্চারা অন্তরে জাতীয় পতাকার প্রতি শ্রদ্ধা ও দেশাত্মকবোধ তেরি হয় এবং পতাকার মাধ্যমে শহীদদের সম্মানকে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/নুসরাত/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত