ঢাকা, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ১৩ চৈত্র ১৪২৯ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

ম্যানেজিং কমিটির দ্বন্দ্বে ৬ মাস শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ

  দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:২৮

ম্যানেজিং কমিটির দ্বন্দ্বে ৬ মাস শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ
রামনগর উচ্চ বিদ্যালয়। ছবি: প্রতিনিধি
দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুর খানসামা উপজেলায় রামনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বিদ্যালয়ের ১৫ শিক্ষক-কর্মচারীদের ৬ মাস ধরে বেতন বন্ধ হয়ে আছে। এতে শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে।

এ বিষয়ে ইতিপূর্বে মৌখিকভাবে বিভিন্ন দপ্তরে অবগত করলেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে অবগত করলে তিনি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে নুরবানু বেগম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এডহক কমিটির মাধ্যমে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। এই অবস্থায় ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা গোপনে তার স্বামীকে সভাপতি বানিয়ে নিয়মিত কমিটির জন্য দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেন। কিন্তু অভিভাবকদের আপত্তিদের মুখে তা অনুমোদন হয়নি। কেন এই কমিটি অনুমোদন হলো না সেই জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা তার নিকটাত্মীয় এক অভিভাবককে দিয়ে আদালতে মামলা করালে সেটি খারিজ হয়। এমন জটিলতায় বিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় কমিটি না থাকায় গত আগস্ট মাস থেকে তাদের বেতন বন্ধ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও দুইজন সহকারী শিক্ষক একপক্ষে আর অপরপক্ষে ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী। অপরপক্ষের ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশিদা আক্তার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এবং ১৯৯৭ সালে এমপিওভুক্ত হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ সংখ্যা ১৩ জন। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এবং কর্মচারীর সংখ্যা ৫ জন। তবে ১ জন আয়া ও ১ জন নিরাপত্তা প্রহরীর পদ শূন্য রয়েছে। অন্যদিকে কাগজে কলমে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী প্রায় ২১৫ জন। কিন্তু বিদ্যালয়ের এই চলমান সমস্যার কারণ ২০২৩ সালে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে মাত্র ১৮ জন ভর্তি হয়েছে। যা গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেকাংশে কম।

সহকারী শিক্ষক আশিষ কুমার দাস বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের উদাসীনতা ও অদক্ষতায় স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। এতে অভিভাবকরা যেমন স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে তেমনি ৬ মাস বেতন বন্ধ থাকায় আমরাও চরম বিপদে পড়েছি।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নুরবানু বেগম জানান, কমিটি জটিলতার কারণে সহকারী শিক্ষকরা বিলে স্বাক্ষর না করায় বেতন উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুরাহা করে বিল বেতন প্রদান করা হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক বলেন, এই সমস্যা নিরসনে আমরা চেষ্টা করছি। এই সপ্তাহেই বেতন পাবে শিক্ষক-কর্মচারীরা। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশিদা আক্তার জানান, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ সত্যিই দুঃখজনক বিষয়। এই উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসন ও দ্রুত সময়ে বেতন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করে স্কুলের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছি।

বাংলাদেশ জার্নাল/জিকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত