ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

লাইনের টাকা না দেয়ায় অটোরিকশা চালক খুন

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ২২:১৮  
আপডেট :
 ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ২২:২৬

লাইনের টাকা না দেয়ায় অটোরিকশা চালক খুন
ছবি: প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কথিত সমিতিকে চাঁদা না দেওয়ায় খুন হন অটোরিকশা চালক মো. একরাম হোসেন (২০)। এ ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছুরি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার এসব তথ্য জানিয়েছেন পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) নাজমুল হাসান।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মধ্যম মাহমুদাবাদ তেলী বাজার মৃত আজগর আলীর ছেলে মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে সাকিব (২০), উত্তর মাহমুদাবাদ সমজি মোল্লাবাড়ি মোহাম্মদ রহুল আমিনের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন ওরফে রানা (২৪), সীতাকুণ্ড পৌরসভা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তাজুল ইসলামের ছেলে জাহেদ হোসেন (২০) ও অটোরিকশা চালকদের কথিত সংগঠন ‘সীতাকুণ্ড সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি’র সাংগঠনিক সম্পাদক, মধ্যম মহাদেবপুর গ্রামের মোহাম্মদ জাফরের ছেলে নূর আহাম্মদ (৪০)।

পিবিআই জানায়, নূর আহাম্মদের লাইনে সিএনজি চালাতেন নিহত একরাম হোসেন। তবে নূর আহম্মদের খোলা ‘দক্ষিণ বাইপাস সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি’তে ৫ হাজার টাকা লাইনের চার্জ দিতে অপরাগতা জানায় একরাম। তাই একরামকে খুনের পরিকল্পনা আঁটতে গত ২২ সেপ্টেম্বর সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড বাজারে বৈঠকে বসেন তারা। সেখানে নূর আহম্মদ হত্যার ছক আঁকেন। ওদিন রাতে একরামের সিএনজি অটোরিকশাকে অনুসরণ করতে করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মধ্যম মহাদেবপুর এলাকায় ইপসা অফিসের সামনে পৌঁছলে গতিরোধ করেন তারা। সেখানে সবাই একরামকে উপর্যপুরি মারধর ও ছুরিকাঘাত করেন। একপর্যায়ে লোকজন বেড়ে গেলে একে একে অটোরিকশা ও বাসযোগে সটকে পড়েন। তবে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে অবস্থা বেগতিক দেখে উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে একরামকে হাসপাতালে নিয়ে যায় গ্রেপ্তার জাহেদ নামে এক সিএনজি চালক। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই নুরুল হুদা বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি মামলাটির ছায়াতদন্ত শুরু করে পিবিআই। একপর্যায়ে ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চার জনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরদিন তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড করলে রিমান্ড শুনানি শেষে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ খানের আদালত আসামি নূর আহাম্মদ ও জাহেদ হোসেনের চার দিন এবং সাকিব ও রানার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে আনার পর আসামিদের ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদেই এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) নাজমুল হাসান বলেন, সীতাকুণ্ডে অটোরিকশা চালক একরাম হোসেনকে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী অটোরিকশা চালক হওয়ায় বেশ কয়েকজন অটোরিকশা চালককে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করি। একপর্যায়ে দুইজন শনাক্ত হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে বাকি দুইজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় একরামকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের আজ (শনিবার) সকালে সীতাকুণ্ডে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিরা পিবিআইয়ের হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছেন। রিমান্ডে থাকা চারজনের মধ্যে দুইজনকে রোববার এবং বাকি দুইজনকে সোমবার আদালতে পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত