ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হিসেবে পেল শিশুরা

  পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:০৩  
আপডেট :
 ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:১৬

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হিসেবে পেল শিশুরা
নতুন নিয়োগ পাওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের বরণ । ছবি প্রতিনিধি

কেউ পড়াশোনা করে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, কেউ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে, কেউ রাজশাহী কিংবা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনেকে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কিংবা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এর শিক্ষার্থী। এরকম ১১৭ জন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক এবং শিশু শ্রেণির শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন। এদের অনেকেরই শিক্ষাজীবনে সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরির স্বপ্ন ছিল। চাকরির মহামন্দার যুগে তাদের স্বপ্ন ফিকে হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো এরকম মেধাবী শিক্ষক পেয়েছে। এতে বিদ্যালয়গুলোর লেখাপড়ার গুণগতমানে ইতিবাচক ফল আসবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তারা।

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় নতুন পদায়নকৃত এসব শিক্ষককে মিষ্টিমুখ করিয়ে বরণ অনুষ্ঠান করেছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে এ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা এবং ওরিণ্টেশনের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মনিরুজ্জামান। প্রধান অতিথি ছিলেন সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার। বক্তব্য দেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা খোকন, সেলিমা সুলতানা, প্রেসক্লাব সভাপতি মানিক মিয়া রানা প্রমুখ।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে বলেন, শিক্ষকরা জাতি গঠনের মহান কারিগর। তাদের সবচেয়ে বেশি মূল্যায়ন করে গেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি এক ঘোষণায় বে-সরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষকদের সরকারিকরণ করেছিলেন। তাঁর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করেছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিও ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লক্ষাধিক শিক্ষককে সরকারিকরণ করেছেন। শিক্ষকদের বেতন স্কেল উন্নীত করেছেন।

সহকারী কমিশনার(ভূমি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো মেধাবী শিক্ষক পেল। এতে বিদ্যালয়গুলোতে মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরি হবে। তিনি নতুন শিক্ষকদের স্মরণ করিয়ে বলেন, শুধু পুঁথিগত বিদ্যা দিয়ে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে না। শিক্ষার্থীদের জ্ঞানমূলক দৃষ্টিভঙ্গী বদলানোর কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের মধ্যে নৈতিক গুণাবলীর পরিস্ফুটন ঘটাতে হবে।

শিশুরা পেল প্রকৌশলী, পরিবেশবিদ ও কৃষিবিদ শিক্ষক । ছবি প্রতিনিধি

নবাগত শিক্ষকরা তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানান, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষাদানের ব্রত নিয়েই তারা এ পেশা বেছে নিয়েছেন। তাদের আন্তরিকতায় প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল আসবে বলে তারা আশাবাদী।

উপজেলার নাগডেমরা ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সদ্য নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র শামীম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিষয়ের প্রাক্তন ছাত্রী সুলতানা, সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রাক্তন ছাত্র সাজিদ হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের প্রাক্তন ছাত্রী মৌসুমি খাতুন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রাক্তন ছাত্র জহিরুল ইসলাম সহ অন্যরা চাকরি জীবনের শুরুতেই এমন সম্মান পেয়ে অভিভূত বলে জানান। তারা জানান, শিক্ষকতা সম্মানজনক পেশা। আর এ পেশা গ্রহণের শুরতেই তাদের যেভাবে আতিথেয়তা করা হলো এতে তারা উদ্দীপ্ত। তারা পেশার সুনাম অক্ষুন্ন রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

আলোচনা ও মত বিনিময় সভা শেষে নবাগত শিক্ষকদের উপজেলা শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে মিষ্টিমুখ করানো হয়। দ্বিতীয় পর্বে শিক্ষকদের ওরিয়েন্টেশন পরিচালনা করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহিদুল হক, আব্দুল বাতেন, নাদিরা বেগম প্রমুখ। এ সময় প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে শিক্ষকদের নানা পরামর্শ প্রদান করা হয়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, বেতন সম্মানজনক হওয়ায় এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে আসা তরুণ-তরুণীরা প্রাথমিক শিক্ষকতায় যোগ দিচ্ছেন। সাঁথিয়ায় নিয়োগ পাওয়া ১১৭ জন শিক্ষক তার জলন্ত প্রমাণ। এতে মানসম্মত শিক্ষাদান ত্বরান্বিত হবে বলে তিনি আশা করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত