৩ বাঘের দখলে সুন্দরবনের টহল ফাঁড়ি
বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:৫৯

সুন্দরবনের গহীনে বনবিভাগের একটি টহল ফাঁড়ির চত্বর তিন বাঘ মিলে প্রায় ২০ ঘণ্টা দখলে রাখলে ভয়ে-আতঙ্কে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সময়টা ‘অবরুদ্ধ’ অবস্থার মধ্যে কাটিয়েছেন। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি স্টেশনের চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়িতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন, সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মোহাম্মদ শামসুল আরেফীন।
|আরো খবর
বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে ফাঁড়ির পুকুরপাড়ে প্রথমে দুটি বাঘের দেখা মিলে। পরে তাদের সঙ্গে আরও একটি বাঘ যোগ দেয়। শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ফাঁড়ি চত্বরে তিনটি বাঘ ঘুরে বেড়িয়েছে; বিশ্রাম নিয়েছে।
এরপর আর বাঘ তিনটিকে দেখেননি কর্মকর্তারা। ওই ফাঁড়িতে সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তাদের ধারণা, বাঘ তিনটি হয়তো বনের গভীরে চলে গেছে।
শরণখোলা রেঞ্জের এসিএফ শামসুল আরেফীন বলেন, চান্দেশ্বর ফাঁড়ির পাশেই বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য। শুক্রবার বিকালে হঠাৎ করে দুটি বাঘ একসঙ্গে ফাঁড়ির ভেতরের পুকুরপাড়ে চলে আসে। তারা ঘোরাঘুরি করতে থাকে। এই পুকুরে প্রাণীরা স্বাদু পানি পান করে থাকে।
ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক শেখ প্রথমে বিষয়টি লক্ষ্য করেন। পরে তিনি অন্যদেরও ডেকে দেখান। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপদ দূরত্বে থেকেই বাঘগুলোকে দেখছিলেন। তারা এ সময় বাঘের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করেন। কিছু পরে দুটি বাঘের সঙ্গে আরেকটি বাঘ এসে যোগ দেয় জানিয়ে শামসুল আরেফীন বলেন, এখন বাঘের প্রজনন মৌসুম। তাই তারা একসঙ্গে চলাচল করছে।
এই টহল ফাঁড়ির আশপাশে পায়ের ছাপের দেখা মিললেও সশরীরে বাঘের দেখা খুব একটা পাওয়া যায় না বলে জানান এই বন কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, অনেক বছর পর টহল ফাঁড়ির ভেতরে বাঘের দেখা মিলল। প্রায় ২০ ঘণ্টা বাঘ তিনটি আর টহল ফাঁড়ির বাইরে বের হয়নি। আজ বেলা ১১টার পর বাঘ তিনটি নিজেরাই বনের গহীনে ফিরে গেছে। শামসুল আরেফিন আরো বলেন, সামনা-সামনি বাঘ দেখলে ভয়তো কিছুটা লাগবেই। তবে কেউ অবরুদ্ধ ছিলেন না। নিজেরাই দরজা বন্ধ করে ঘরের ভেতর ছিলেন।
বনকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য ওই টহল ফাঁড়িতে চারটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে উল্লেখ করে এসিএফ বলেন, বাঘগুলো যদি কোনো ধরনের হিংস্র আচরণ করত তাহলে তারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের বনের ভেতরে পাঠানোর চেষ্টা করত। বাঘগুলো শান্ত ও স্বাভাবিক আচরণ করায় বনকর্মীরা তাদের দৈনন্দিন বিচরণ ও জীবনাচারণ উপভোগ করেছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমএ