ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

হামলায় আহত বিএনপি নেতাদের হাসপাতালে যেতে বাধার অভিযোগ

  কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:৩৬

হামলায় আহত বিএনপি নেতাদের হাসপাতালে যেতে বাধার অভিযোগ
ছবি: প্রতিনিধি।

পথে ঘাটে বাধা ও হামলার মুখে বিএনপির পূর্বঘোষিত ১০দফা দাবিতে খুলনা বিভাগীয় সমাবেশে যেতে পারেনি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। শুক্রবার (০৩ ফেব্রুয়ারী) রাত সাড়ে ১১টায় ভেড়ামারা রেলষ্টেশনে পুলিশের পরিচয়ধারীদের হামলা ও লাঠিচার্জ করে শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর করে তাদের টিকেট ছিনিয়ে নিয়ে প্লাটফরম থেকে বের করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ আক্রান্তদের। যদিও অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে নাকচ করে দিয়েছে ভেড়ামারা থানা পুলিশ।

একইভাবে শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ১০টায় ৮টি বাস ও ১০টি মাইক্রো ভর্তি নেতাকর্মীদের গাড়ী বহর যাচ্ছিল খুলনার বিভাগীয় সমাবেশে যোগদিতে। এসময় পথিমধ্যে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার নামক স্থানে কতিপয় যুবকদের কয়েকটি মটর সাইকেল রাস্তার মাঝখানে ব্যারিকেট দিয়ে বাধার সৃষ্টি করে এবং বাসযাত্রী নেতাদের বেধড়ক পিটুনি দিয়ে ওই গাড়ী বহরকে আবার কুষ্টিয়া অভিমুখে ফিরিয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী নেতাকর্মীদের।

সেখানে বেধড়ক মারপিটের শিকার রক্তাক্ত জখমে গুরুতর আহত হলেও তাদের নিকটস্থ হাসপাতালে যেতে দেয়নি হামলাকারীরা। এমন অভিযোগ করে দৌলতপুর উপজেলার ৭নং হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা বেলাল হোসেন (৫৫) বলেন, ‘এটা সরকারের দমন পীড়নের নগ্ন চরিত্রের বহি:প্রকাশ, ওরা নির্দয়ভাবে বেধড়ক মারধর করলো, আমাদের মাঝে বয়ষ্ক নেতারা গুরুতর আহত হলেও নিকটস্থ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকৎসা নিতে দেয়নি’। প্রচন্ড ব্যাথা যন্ত্রনায় কাতর হলেও বাধ্য হয়ে আমরা কুষ্টিয়াতে ফিরে এসে হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছি’।

মারধরের শিকার ও প্রত্যক্ষদর্শী আরও একজন বিএনপি নেতা উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম (৭০) বলেন, ‘আমরা দিনে গিয়ে সমাবেশ শেষে দিনেই ফিরে আসার জন্য শনিবার ভোরে গাড়িবহরসহ খুলনা অভিমুখে যাত্রা করি। পথিমধ্যে বারোবাজার এলাকায় পৌছানো মাত্রই দুইটা মটর সাইকেল এসে রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে আমাদের গাড়ির গতিরোধ করে। এরপর আরও কয়েকটি মটর সাইকেল আরোহী লোকজন এসে একেবারে সামনে থাকা বাসটির যাত্রী হিসেবে যারা ছিলো তারা সবাই বয়স্ক নেতৃবৃন্দ এবং সবাই নিজ এলাকায় জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি’।

ওরা আমাদের বাসের দড়জায় দাঁড়িয়ে একজন করে বের হতে বলে এবং বের হলেই হকিষ্টিক, রড বাটাম দিয়ে মারধর করতে থাকে। এসময় পিছনের অন্যান্য বাসগুলিতে ভাঙ্গচুর করতে শুরু করায় বেশ কিছু সংখ্যক বাস ও মাইক্রো বাস পিছন দিক থেকে সটকে পড়ে’। এরা সবাই উঠতি বয়সী ছেলেপেলে। আমাদের সাথে কোন কথা বলার সুযোগ দিচ্ছেনা’। দূরে পুলিশের গাড়ী থাকলেও এগিয়ে আসেনি’। সেখান থেকে কোন রকম প্রানে বেঁচে ফিরলেও কুষ্টিয়াতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছি। কিন্তু ভর্তি হওয়া অনিরাপদ হওয়ায় ব্যান্ডেজসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ব্যবস্থাপত্র নিয়ে এখন বাড়িতে চলে এসেছি’।

এদিকে শুক্রবার রাতে রেল ষ্টেশনে পুলিশের হামলার বর্ননা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও আক্রান্ত যুবদল নেতা মন্টি সরকার বলেন, ‘ঘটনার সময় ভেড়ামারা থানার একজন এসআই এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করে আমরা কোথায় যাবো, খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশে যাচ্ছি কথাটা বলার পর ওই পুলিশ আমাদের টিকিট দেখতে চায়। আমার কাছে থাকা ৪৩টি টিকিট ওই পুলিশ হাতে নিয়ে ওয়ারলেসে থানা থেকে আরও পুূলিশ আসতে বলে, কিছুক্ষনের মধ্যে প্লাটফরমে ভেড়ামারা থানার ওসিসহ বেশ কিছু সংখ্যক পুলিশ এসে হাজির হলো। ওসি সাহেব আমাদের বল্লো আপনারা কোথায় যাবেন বলেন ? দৌলৎপুরে ফিরলে এক ট্রিটমেন্ট আর খুলনায় যেতে চাইলে অন্য ট্রিটমেন্ট। এই কথা বলার সাথে সাথে আমাদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে দেয়। তখন আমদের সবাই যেদিকে সুযোগ পেয়েছে দৌড়ে পালিয়ে গেছে। এসময় পুলিশের মধ্য থাকা কিছু যুবক কয়েকটি ককটেল ফোটাতে থাকে’। উপায়ান্তর না পেয়ে আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বাড়ি ফিরে আসি’। আমি যতটুকু বলেছি তার পুরোটাই সচিত্র প্রমান পাবেন ষ্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিলেই সবকিছু দেখতে পাবেন। আমাদের কেউ যেনো মোবাইলে কোন ছবি বা ফুটেজ নিতে না পারি সেজন্য আগেই আমাদের মধ্যে যার যার এন্ড্রয়েট ফোন ছিলো সেগুলি কব্জা করে নেয় পুলিশ। তবে এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আকিবুল ইসলাম জানান, ‘রেল ষ্টেশনে পুলিশ পরিচয়ে মারধর করে টিকিট ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে এমন কোন অভিযোগ নিয়ে কেউ থানায় আসেনি, সেকারণে এজাতীয় অভিযোগের কোন ভিত্তি বা সত্যতা পুলিশের কাছে নেই’।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত