ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন

পার্বতীপুরে ডিজেলের সরবরাহ, বদলে দেবে কৃষির চিত্র

  সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩, ১৮:০১

পার্বতীপুরে ডিজেলের সরবরাহ, বদলে দেবে কৃষির চিত্র
জ্বালানি তেলের সরবরাহ থাকায় সেচ সুবিধা পাচ্ছেন কৃষক। ছবি: প্রতিনিধি

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে গত ১৮ মার্চ বহু কাঙ্খিত ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল প্রকল্প বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্বোধনের পর থেকেই তেল আসছে।

এখন প্রতিদিন চাহিদা মোতাবেক ভারতের শিলিগুড়ির নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল (ডিজেল) পার্বতীপুরের ডিপোতে আসছে। এতে করে এই অঞ্চলের জ্বালানি তেলের চাহিদা ও সরবরাহ সমতা রয়েছে। পাইপলাইনে জ্বালানি তেল (ডিজেল) আসায় পরিবহন খরচ ব্যারেলপ্রতি ৬ মার্কিন ডলার সাশ্রয় হচ্ছে। ব্যারেলপ্রতি ডিজেল তেলে মূল্য সাশ্রয়ী হওয়ায় ডিজেল তেলের দাম আরও কমে যেতে পারে আশা করছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।

দিনাজপুরসহ উত্তরাাঞ্চলে কৃষি ও যানবাহনের জ্বালানি তেলের সংকট একেবারেই কেটে গেল, পাশাপাশি ডিজেল তেলের সহজ প্রাপ্তিতা নিশ্চিত হওয়ায় এই অঞ্চলের চাষিরা আশার সঞ্চার ঘটিয়েছে। বিশেষ করে ইরি-বোরো মৌসুমে পানির সেচ এবং জমির চাষাবাদ শ্যালো মেশিনচালিত যন্ত্রের মাধ্যমে করার কারণে ডিজেলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। চাহিদা আর সরবরাহ পাইপলাইনের মাধ্যমে সহজলভ্য হওয়ায় কৃষিকাজের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হবে।

দিনাজপুর সদরের শেখপুরা গ্রামের এনাম সরকার বলেন, দিনাজপুরসহ এই অঞ্চল কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় সেচের কোনো বিকল্প নেই। জমি চাষাবাদ করার জন্য এখন পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টরের ব্যবহার শুরু হয়েছে। এতে ডিজেল তেলের প্রয়োজন হয়। ইঞ্চিনচালিত প্রতিটি মেশিনে ডিজেল ব্যবহার করতে হচ্ছে। একই গ্রামের আব্দুল মমিন সরকার বলেন, এখন ইরি-বোরো মৌসুম চলছে। শ্যালো মেশিন চালিয়ে জমিতে সেচ দেয়া হচ্ছে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আসায় হাতের কাছেই তেল পাওয়া যাবে। কৃষি কাজের উন্নয়ন ঘটাতে মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।

চিরিরবন্দরের সাইতারা গ্রামের জামাল উদ্দীন বলেন, এক সময় জ্বালানি তেলে ডিপো থেকে ট্যাংকলরিতে তেল নিতে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা লাগত। পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিপোতে ডিজেল আসায় এখন আর ট্যাংক-লরি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না ।

ট্যাংক-লরিতে তেল সরবরাহকারী আবু রজব আলী বলেন, পার্বতীপুরের ডিপো থেকে আগে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৫৮টি উপজেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হত। এখন ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আসায় রংপুর বিভাগ ও রাজশাহী বিভাগের ১৬টি জেলায় তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। তেলের যোগান বেশি থাকায় সরবরাহ বেশি হচ্ছে।

দিনাজপুর জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন বলেন, দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে কৃষির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। কৃষি কাজের জন্য ডিজেল লাগবেই। ভাল ফসলের জন্য সেচ আবশ্যক। সেচের জন্য ডিজেল তেলের প্রয়োজন। আগে মোংলা বন্দর থেকে রেলের ওয়াগন দিয়ে পার্বর্তপুরের ডিপোতে ডিজেল তেলের সরবরাহ করা হত। ভারত থেকে স্বল্প সময়ের মধ্যেই পরিবহন খরচ ছাড়াই পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আসায় খরচ কমে যাবে।

পাশাপাশি জ্বালানি তেলের সংকট একেবারেই কেটে গেল এবং এই অঞ্চলের মানুষের কৃষি ও যানবাহন সব ক্ষেত্রেই জ্বালানি তেলের চাহিদা মোতাবেক যোগান পাওয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেলের চাহিদা ও সরবরাহ ঠিক থাকায় এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন হতে বেশি সময় লাগবে না।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত