ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

মার্কিন প্রতিবেদনে কিছু মৌলিক ত্রুটি আছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৩, ০১:০৫

মার্কিন প্রতিবেদনে কিছু মৌলিক ত্রুটি আছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী যে সংসদীয় গণতন্ত্র রয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে রেখেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে তা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। শিগগিরই এ প্রতিবেদনের ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শাহরিয়ার আলম বলেন, এই রিপোর্টে কিছু মৌলিক ত্রুটি আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে সংসদীয় গণতন্ত্রের সরকার গঠন হয়, যেখানে বেশির ভাগ ক্ষমতা ন্যস্ত প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কাছে।

এ বিষয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশে একজন প্রধানমন্ত্রীর যতটুকু ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন ততটুকুই আছে। এটির ডিগ্রি অব অ্যাপ্লিকেশন বা অন্যকিছু নিয়ে প্রশ্ন তোলা, উদ্বেগ বা সংশয় প্রকাশ করার কোনো নৈতিক অধিকার কারও নেই। এ বিষয়ে বলতে গেলে আমাদের অনেক কিছু বলতে হয়, যা অনেক অপ্রীতিকর হতে পারে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রে কীভাবে আইন প্রণয়ন হয় সেটা আপনারা দেখছেন। সেখানে এভাবে ঢালাওভাবে একটা পজিশনকে (প্রধানমন্ত্রীকে) বা তার সাংবিধানিক কার্যালয়কে হেয় করার যে প্রবণতা আমরা দেখেছি, সেটা খুবই দুঃখজনক।

এই প্রতিবেদনে বেশি কিছু মৌলিক ত্রুটি রয়েছে জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার আগে আমাদের জানানো এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়ার জন্য আমরা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি। এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তা এবারও মানা হয়নি।

নিবন্ধন বাতিল করা অধিকারের মতো সংস্থার তথ্য প্রতিবেদনে ব্যবহার করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, পরিষ্কারভাবে বলতে চাই বর্তমানে বাংলাদেশে কার্যক্রম চালানোর কোনো লাইসেন্স অধিকারের নেই। কোনো সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন বা আইএনজিও যার একটি রাজনৈতিক পরিচয় আছে, তাদের নিরপেক্ষতার দৃষ্টিতে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এ রকম ঘাটতি অব্যাহত থাকলে এসব রিপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে যায়।

অনিবন্ধিত সংগঠনকে আমলে নেয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি অন্য দেশগুলোকেও সতর্ক করেন তিনি। শাহরিয়ার আলম জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন আরও পর্যালোচনা করে দেখবে সরকার। এ বিষয়ে সরকারের পর্যবেক্ষণ সামনের দিনগুলোতে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তুলে ধরা হবে। তবে প্রতিবেদনের বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের উন্নতির কথাও রয়েছে বলে জানান শাহরিয়ার আলম।

এই প্রতিবেদনের ত্রুটির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এতে জোরপূর্বক গুমের সংখ্যা ৮১ জন বলা হয়েছে। কিন্তু এই সংখ্যাটি ৭৬। সেখানে লেখা রয়েছে, বাংলাদেশ দাবি করেছে ১০ জনকে চিহ্নিত করা গেছে। এমনভাবে বলেছেন যেন এটা চূড়ান্ত নয়। কিন্তু এই ১০ জনের তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার পরে জাতিসংঘ নিজেরা যাচাই-বাছাই করে ৭৬ জনের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। এ ধরনের মৌলিক ত্রুটি এই রিপোর্টে আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের বাধা, সভা-সমাবেশে বলপ্রয়োগ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানকে বাধা প্রভৃতি অন্যান্য সময়ের মতো অব্যাহত ছিল।

বাংলাদেশ জার্নাল/জিকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত