ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে ৫০৬ প্রাথমিক বিদ্যালয়

  কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৩, ০৯:৫৮

প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে ৫০৬ প্রাথমিক বিদ্যালয়
ছবি - সংগৃহীত

কুড়িগ্রামে প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে ৫০৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ ও পদোন্নতি না দেয়ায় অবসরজনিত কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা বিভাগ।

সরেজমিনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চৈতার খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আড়াই শতাধিক। এতে মোট ৮ শিক্ষক থাকলেও সম্প্রতি বদলি হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য হয়ে যায়। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষক বা চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন শিক্ষক ছাড়াই চলছে বিদ্যালয়টি।

শুধু তাই নয়, সদর উপজেলার বাসুর ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে দেড় বছর ধরে। সেখানে একজন সহকারী শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়ে চালানো হচ্ছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। একই অবস্থায জেলার ৯ উপজেলার ৫০৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এতে করে বিঘ্নিত হচ্ছে সহকারী শিক্ষকদের তদারকি, শ্রেণি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, নিয়মিত পাঠদানসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম।

সদর উপজেলার চৈতার খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুবাস চন্দ্র সেন জানান, এ বিদ্যালয়ে প্রায় এক মাস হতে চলল প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। কোনো সহকারী শিক্ষককে যে চলতি দায়িত্ব দেয়া হবে সেটাও দেয়া হয়নি। এতে করে পাঠদানে সহকারী শিক্ষকদের যে দেখাশোনার বিষয় সেটি নেই। যে যার মতো ক্লাস নিচ্ছে; যে যার মতো স্কুলে আসছে, আবার চলেও যাচ্ছে। এক কথায় অনেকটা হ-য-ব-র-ল অবস্থা। আমরা চাই দ্রুত এই স্কুলে একজন প্রধান শিক্ষক দেয়া হোক বা কোনো সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেয়া হোক।

একই উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার বাসুর ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খন্দকার আরজুমা জানায়, প্রায় দেড় বছর ধরে বাসুর ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য। এ অবস্থায় একজন সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো পূর্ণাঙ্গ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এতে করে দায়িত্ব পাওয়া উক্ত প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে মিটিংয়ে গেলে ক্লাস নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপরও প্রভাব পড়ে। এজন্য প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাটা জরুরি।

চৈতার খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আবুল হোসেন জানান, ‘বিদ্যালয়ে আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। এতে প্রধান শিক্ষক না থাকায় বর্তমানে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। ক্লাসের ওপর এর প্রভাব পড়ছে। আমরা অভিভাবকরা চাই ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়টিতে দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখা হোক।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ না হওয়া ও পদোন্নতি না দেয়ায় অবসরজনিত কারণে এমনটি হয়েছে। তবে শিক্ষকদের পদোন্নতি কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ হলে প্রাথমিক শিক্ষা আরও বেগবান হবে।

৫০৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৩৫টিতে সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দিয়ে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হলেও বাকিগুলো পরিচালিত হচ্ছে একেবারেই অভিভাবকহীন। ২৬২টি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য।

প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য এমন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে উলিপুর উপজেলায় ৮৮টি, সদর উপজেলায় ৪৯টি, চিলমারী উপজেলায় ২৬টি, নাগেশ্বরী উপজেলায় ৯২টি, ফুলবাড়ী উপজেলায় ৭২টি, ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় ৪৯টি, রাজারহাট উপজেলায় ৪৩টি, রৌমারী উপজেলায় ৬০টি ও চর রাজিবপুর উপজেলায় ২৭টি রয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত