হত্যার পর শিশুকে মাটিচাপা: দুলাভাই গ্রেপ্তার
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৩, ১৬:৪৪ আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৩, ১৮:১৬
গাজীপুর মহাগরের বাসন এলাকা থেকে নিখোঁজের ২দিন পরে মাটি চাপা অবস্থায় এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাসন থানার ইসলামপুর এলাকা থেকে গত ১৫ মার্চ বিকেলে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ৯ দিন পর বুধবার (২২মার্চ) গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকা থেকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার মো. তাহারুল মিয়া (৩৫), রংপুরের পীরগঞ্জ থানার জামালপুর এলাকার ইয়াসিন আলীর ছেলে। ভিক্টিম সাখাওয়াত (৬) রংপুরের মিঠাপুকুর থানার বড় হযরতপুর এলাকার মো. জাফর আলীর ছেলে। গ্রেপ্তার তাহারুল ও ভিক্টিম স্থানীয় ভোগড়া পেয়ারা বাগান এলাকার মোবারক মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া।
বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা) মো. ইব্রাহিম খান তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই তথ্য জানিয়েছেন। এসময় আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান, বাসন থানার ওসি মো. সানোয়ার জাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৩মার্চ সন্ধ্যায় সাখাওয়াত বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে পরদিন তার মা বাসন থানায় জিডি করেন। পরে তার বাবা বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলাও দায়ের করেন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) রেজওয়ান আহমেদের নেতৃত্বে ৬ দিন ধরে সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ ও তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এলাকা থেকে ২২মার্চ মো: তাহারুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তাহারুল পুলিশকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, মো. তাহারুল মিয়া ভিক্টিমের চাচাতো বোন শারমিনকে দুইবছর আগে বিয়ে করেন। বিবাহের পর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলতে থাকে। গত প্রায় ৮ মাস আগে সাখাওয়াতের পরিবার কাজের উদ্দেশ্যে গাজীপুর বাসন থানাধীন পেয়ারা বাগান এলাকায় বসবাস শুরু করে। আসামি মোঃ তাহারুল মিয়া তার বউ শারমিনকে নিয়ে সাখাওয়াতের পরিবারের পাশে একটি রুমে প্রায় এক মাস যাবৎ ভাড়া থেকে রাজমিস্ত্রী শ্রমিকের কাজ করে আসছে। তাহারুল মিয়াও প্রায় এক মাস আগে তার বউ শারমিনকে নিয়ে সাখাওয়াতদের পরিবারের ভাড়া বাড়ির পাশে অপর একটি রুমে ভাড়া উঠেন এবং এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ শুরু করেন। গত ১৩মার্চ বিকেলে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এসময় সাখাওয়াতের মা তাহারুলকে শাসন ও বকাঝকা করলে তাহারুল ক্ষিপ্ত হয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যান।
এসময় তাহারুল বাড়ির গেটের সামনে সাখাওয়াতকে পেয়ে পাশের দোকান থেকে মজা খাওয়ানোর কথা বলে মহানগরের ইসলামপুর এলাকার ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের পশ্চিমে মোঃ কবির হোসেনের সদ্য মাটি ভরাটকৃত ফাঁকা জমিতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মাটি চাপা দিয়ে তাহারুল চলে যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা) মো. ইব্রাহিম খান জানান, ১৫ মার্চ সন্ধ্যায় এলাকাবাসী মাটির নিচে চাপা দেয়া শিশুর লাশের পা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করলে ভিক্টিমের বাবা-মা সন্তানের লাশটি শনাক্ত করেন।
পরবর্তীতে ঘটনা উদঘাটনের জন্য সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ ও তথ্য সংগ্রহ করে ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামি তাহারুলকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি
