ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

বেপরোয়া গাড়ি চালাতে নিষেধ করায় ঢাবি ছাত্রকে বেদম পিটুনি

  ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৩, ১২:৪৪

বেপরোয়া গাড়ি চালাতে নিষেধ করায় ঢাবি ছাত্রকে বেদম পিটুনি
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর প্রতিবাদ করায় জুবায়ের ইবনে হুমায়ুনকে বেধড়ক পিটিয়েছে একদল শিক্ষার্থী।

গত রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসিম উদ্দীন হলের সামনে এই ঘটনা ঘটে। পরে জুবায়েরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে বর্তমানে সেই শিক্ষার্থী হলে অবস্থান করছেন।

জুবায়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি স্যার এ.এফ রহমান হলে থাকেন।

জুবায়ের ইবনে হুমায়ুন জানান, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী তবারকের নেতৃত্বে তাকে পেটানো হয়েছে। তার সাথে ছিল শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের হেদায়েতুন নুর, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের বিপ্লব হাসান জয়, মোহাম্মদ শোভন, সাকিব, টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজেমেন্টের সিফরাত সাহিল, মাস্টারদা সূর্যসেন হলের লাবিব, কবি জসীমউদ্দিন হল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদ ও রহমান জিয়া এবং হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের অর্ণব খান জড়িত ছিলেন। তারা সবাই ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জুবায়ের বলেন, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন বন্ধুর সাথে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে ইফতার করছিলাম। ইফতার শেষে যখন আমরা কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে বসার জন্য যাচ্ছিলাম, এ সময় একটা প্রাইভেট কার খুব বেপরোয়া গতিতে আমাদের অতিক্রম করে। সেজন্য রাস্তার সব কাঁদা আমাদের ওপর ছিটকে পড়ছে। এরপর তাদের থামিয়ে আমরা জিজ্ঞাসা করি আপনারা এরকম উগ্র আচরণ করছেন কেন? পরে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি তারা সবাই আমাদের ব্যাচমেট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এরপর আমরা তাদের এভাবে গাড়ি না চালাতে বলে ছেড়ে দিই।’

জুবায়ের বলেন, ‘তাদের সঙ্গে কথা শেষ করে আমরা জসিম উদ্দীন হলে এসে ফ্রেশ হচ্ছিলাম। এরপর আমার মোবাইলে একটা অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসে। পরে আমরা জানতে পারি এই নম্বরটা জিয়া হলের সাহিলের নম্বর। ফোনে আমরা কোথায় আছি সেটা জানতে চাওয়া হয়। আমি আমার লোকেশন বলি। এ সময় আমরা তিনজন ছিলাম। হঠাৎ দেখি, বিশ-ত্রিশ জন ছেলে স্টাম্প, বাঁশ ও রড হাতে নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসছে। তারপরও আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম। তারা এসে ‘ক্যাম্পাসে আমরা যেমন ইচ্ছা তেমন করব। তোরা কে ঠেকাবার’ এই কথা বলে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পাঁচ থেকে সাত মিনিট ধরে আমাকে হাত,পা, মাথাসহ শরীরের সব জায়গায় পেটানো হয়। পরে কয়েকজন বড় ভাই আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।

তবে প্রধান অভিযুক্ত তবারক হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি বরং তাদেরকে পেটানোর হাত থেকে রক্ষা করছি।’

এই বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। হলের যেসব শিক্ষার্থী এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের কাছ থেকে বক্তব্য নিয়েছি। শুনে বুঝেছি, এটার সঙ্গে অনেক হলের শিক্ষার্থী জড়িত এবং আরও ডিটেইলসে এই সম্পর্কে জানা দরকার। তাই আমি তিন সদস্যের একটা কমিটি গঠন করেছি। তারা আমাকে এই ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট দেবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএ/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত