ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

অপহরণের অভিযোগে ঢাকা কলেজের দুই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৩, ১৭:৩৭

অপহরণের অভিযোগে ঢাকা কলেজের দুই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
জনি হাসান ও এস এম শফিক। ফাইল ছবি

চাঁদা না পেয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তাকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির নিউ মার্কেট থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক জনি হাসান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এস এম শফিক।

বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা কলেজের নর্থ হলের ১২০ নম্বরে রুমে এ ঘটনা ঘটে। পরে শুক্রবার অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে নিউ মার্কেট থানা।

নিউ মার্কেট থানার ওসি মো. শফিকুল গনি সাবু বলেন, চাঁদা না পেয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে অপহরণের অভিযোগে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রিমান্ড আবেদন করে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে তারা ছাত্রলীগের কোনো কমিটিতে নেই বলে জেনেছি। মামলাটির তদন্ত চলছে। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

থানায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অয়ন সিগমাইন্ড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করেন ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান। প্রতিষ্ঠানটি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ করে। অভিযুক্তরা ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে এবং ভুক্তভোগী মেহেদীর কাছে চাঁদা দাবি করছিলেন। চাঁদা না দেয়ায় গত ২৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকা থেকে প্রতিষ্ঠানটির লাগানো সিসি ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে যান তারা। রাতে সিয়াম ও রমজান দুই ছাত্রলীগ কর্মী মেহেদীকে ফোন করে বিষয়টি জানায়।খুলে নিয়ে আসা ক্যামেরা ফেরত পেতে হলে তাদেরকে ঢাকা কলেজে যেতে বলেন তারা।

তৌকির নামের এক কর্মচারীকে ঢাকা কলেজে পাঠান মেহেদী। ক্যামেরা ফেরত নিতে আসা তৌকিরকে জিম্মি করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করেন অভিযুক্তরা। টাকা না পেলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়৷ পরে ভুক্তভোগী মেহেদী ঢাকা কলেজের নর্থ হলে আসলে তাকেও জিম্মি করা হয়। ছাত্রলীগের নেতাদের নেতৃত্বে মেহেদী ও তৌকিরকে হলে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এসময় তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা, এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়৷ রাতে মারধর করে তৌকিরকে ছেড়ে দিলেও মেহেদীকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের কারণে মেহেদীর অবস্থা বেগতিক দেখে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা কলেজ থেকে বের করে নিউ মার্কেটের গাউছিয়া মোড়ে কৌশলে ফেলে রেখে পালিয়ে যান অভিযুক্তরা। এই সময় নিউ মার্কেট থানার টহল পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা মেহেদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী মেহেদী বাদী হয়ে জনি হাসান, এস এম শফিকসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নম্বর (১৮/৮৫)। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগ কর্মী মো. গোলাপ হোসেন, মোহেরাব হোসেন সিয়াম, অর্নব, মো. রমজান, গোপাল, রাব্বী তালুকদার, মো. বেল্লাল হোসেন, তারিফ, সালমান, মো. রায়হান, মাসুম, ফাহিম, শাহীন৷

ঢাকা কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মামলার আসামিরা সবাই ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সবাই নর্থ হলের আবাসিক ছাত্র। জনি ও শফিকের নেতৃত্বে নিউ মার্কেটসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

অপহরণ ও নির্যাতন মামলায় দুই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত