ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

গাড়ি চালকদের অভ্যাস পরিবর্তনে সেইফটি প্রজেক্ট

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩, ১৯:৪৪  
আপডেট :
 ০৩ জুন ২০২৩, ২০:৩২

গাড়ি চালকদের অভ্যাস পরিবর্তনে সেইফটি প্রজেক্ট
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর যানজট নিরসনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সঙ্গে কাজ করছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকা। প্রজেক্টটির নাম দেয়া হয়েছে ‘ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্ট’।

প্রাথমিক পর্যায়ে তিনবছর মেয়াদী প্রজেক্টের কার্যক্রম এরইমধ্যে একবছর হতে চলেছে। সফলতা পেলে পরে এর মেয়াদ বাড়ানো হবে। আর প্রজেক্টটির সম্পূর্ণ বিনিয়োগ করছে দেশটি।

শনিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্টের ডেপুটি প্রজেক্ট লিডার মি. ইরিয়ে, প্রজেক্ট গবেষক মিস সুজিমুরা, অফিস সেক্রেটারি (কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) সামমুন সুলতানা, কমিউনিকেটর সুজানা আকিকো হুসাইন এবং ডিএমপির মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অফিস সেক্রেটারি (কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) সামমুন সুলতানা।

ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা প্রজেক্টে ডিএমপির ছাড়াও বিআরটিএ, বিআরটিসি, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট বিভিন্ন সহযোগিতা করছে। এই প্রজেক্টে কত টাকা দিয়ে জাইকা সহযোগিতা করছে সে ব্যাপারে কিছু জানায়নি সংস্থাটি।

তিনি জানান, ঢাকা শহরে কেন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ব্যাপারে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, ডিএমপি কীভাবে কাজ করছে সেসব বিষয়ে জাইকা কাজ করছে। এরইমধ্যে রাজারবাগ স্কুলে শিক্ষার্থীদের সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। আমাদের মধ্যে একটা প্রচলন আছে- রাস্তা খালি আছে সিগন্যাল মানবো না। সেখানে লালবাতি জ্বলুক বা সবুজ বাতি জ্বলুক। মানুষের এসব চিন্তাভাবনার পরিবর্তন আনায় আমাদের প্রজেক্টের অন্যতম লক্ষ্য। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা এখন ছোট। তাদের যেভাবে শিক্ষা দেয়া হবে তারা এগুলো ভবিষ্যতে অনুসরণ করবে। আমরা জানি ট্রাফিক আইন মানা বা সড়ক দুর্ঘটনা খুব স্বল্পসময়ের মধ্যে সমাধান করা সম্ভব হবে না। তবে আমরা যেভাবে কাজ করছি তা পাঁচ থেকে দশবছর পর ফলাফল পাবো। এসব শিক্ষার্থীরা যখন নিজে গাড়ি চালাবে বা রাস্তা পারাপার হবে, তখন যেন এখন আমরা যা শেখাচ্ছি সেই নিয়ম মেনে চলতে পারে। এজন্য আমরা স্কুল থেকে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছি।

জাপানও এভাবে তাদের সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও সড়কে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছে জানিয়ে সামমুন সুলতানা বলেন, জাপানে একসময় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এতো ভালো ছিল না। কিন্তু এখন তারা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের অনন্য উদাহরণ। তারাও সড়ক সম্পৃক্তত সচেতনা ও জ্ঞান স্কুল থেকে শুরু করেছিল। যার কারণে এখন ফলাফল পাচ্ছে।

চালকদের সফটওয়্যার প্রজেক্ট নিয়ে কাজ চলছে:

জাইকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজধানীর বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের সফটওয়্যার প্রজেক্ট নিয়ে তারা কাজ করছেন। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এটাও আছে। বর্তমানে চালকদের ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে। প্রথমে ডিএমপির একটি শাখাকে ধরে এটার কাজ চলছে। সবাইকে ট্রেনিং দেয়া হলে এই সফটওয়ার চালু করা হবে। এরমাধ্যমে আমরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে পারব। এতে বেরিয়ে আসবে সড়কের কোন কোন জায়গাতে দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে; এটার জন্য কী কী করতে হবে। এখন সড়কদুর্ঘটনা ঘটলে পুরোপুরি তথ্য মিলছে না। এই সফটওয়ারে চালুর পর তাৎক্ষনিক ট্রাফিক পুলিশ তথ্য পাঠাতে পারবে। যা ডাটাবেজে থাকবে।

ট্রাফিক শিশু পার্ক:

ট্রাফিক আইন-কানুন মেনে চলার জন্য একটি শিশু পার্ক হবে। যেটা দেশে এখনও নেই। এখানে ট্রাফিক সম্পর্কে বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া থাকবে। এটা আমাদের ছোট্ট একটা প্রজেক্ট। প্রথমে একটা-দুইটা তৈরি হলে পরে আরও করা সম্ভব হবে। এছাড়া জেব্রাক্রসিংয়ের প্রজেক্টের পরিকল্পনা আছে বলেও জানিয়েছে জাইকার প্রজেক্ট কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, আমরা পাঁচ-দশ বা তার বেশি সময়ের বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে থাকি। তবে এবারের প্রজেক্টটা অনেক ছোট। এটাতে যদি সাধারণ মানুষসহ সবার সহযোগীতা পাওয়া যায় তাহলে পরিধি বড় পরিসরে করা হবে। বর্তমানে যানজট নিরসনে ডিএমপি এরিয়ায় কার্যক্রম চালু করা হলেও পরবর্তী দেশজুড়ে এই ধরণের কার্যক্রম চলমান থাকবে।

একবছরে প্রজেক্ট কতটা এগিয়ে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস কর্মকর্তা সামমুন সুলতানা বলেন, একটা কাজ শুরু আগে বিভিন্ন চুক্তির ব্যাপার থাকে। এরপর সব সংস্থাকে একসঙ্গে করা, প্লান করা সব মিলিয়ে অনেককিছু হয়েছে। আমরা স্কুল প্রোগ্রামগুলো শুরু করেছি। বিভিন্ন সার্ভে করেছি।

তিনবছরের মধ্যে সড়কে কোনো উন্নতি সম্ভব হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা শুরু করেছি। জেব্রাক্রসিং সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অনেকে জানেন না। আমরা এগুলো নিয়ে কাজ করছি। তিনবছরে আমরা হয়ত রেজাল্ট পাবো না। তবে পাঁচ-সাত বছর পরে পাবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত